পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় গালওয়ান নদীর উপত্যকায় গিজগিজ করছে চীনা সেনাদের তাঁবু। গতকালই উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছিল। দেখা গিয়েছিল তাঁবুর ছাউনিতে ব্যবহার করা হয়েছে কালো ত্রিপল। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহতেও যে এলাকা ছিল ধূধূ। এখন সেখানেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে অবস্থান করছে পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনাদের তাঁবু। ২২ মে থেকে ২৬ জুন – ৩৩ দিনের উপগ্রহ চিত্রে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর ছবি।
১৪ নম্বর পেট্রলিং পয়েন্ট এলাকাতেও ঘাঁটি গেড়েছে চীনা সেনারা। যে এলাকায় গত ১৫ জুন রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছিল দুই বাহিনী। ভারতের ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয় মুখোমুখি সংঘর্ষে। দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দাবি, চীনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। যদিও বেজিং ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও পরিসংখ্যান স্পষ্ট করেনি।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, চীনাবাহিনী গালওয়ান উপত্যকা বরাবর ভারতীয় ভূখণ্ডের ১৩৭ মিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়েছে। এবং উপগ্রহ চিত্রে যে ছাউনি দেখা যাচ্ছে সেগুলি ওই এলাকারই। উপগ্রহ চিত্রে যে যে জায়গায় লাল ফৌজের অনুপ্রবেশ চিহ্নিত করেছে, সেখানে গত এক দশক ধরে টহল দিচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কী করে গালওয়ান নদী উপত্যকা এলাকায় এই নির্মাণ সম্ভব হল?
কালো ত্রিপল দেওয়া যে ছাউনিগুলির ছবি সামনে এসেছিল সেই সেক্টরে ৯ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ১৬টি শিবির চিহ্নিত করেছে উপগ্রহ চিত্র। ওই ছবি সামনে আসার পর অনেকেই বলছেন, সামরিক স্তরের আলোচনায় চীনের তরফে বাহিনী সরানোর কোথা বলা হলেও ওগুলো আসলে লোক দেখানো। উপগ্রহ চিত্রে এও ধরা পড়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে সামরিক সজ্জার বহর বাড়াচ্ছে বেজিং।
এক প্রাক্তন সেনা কর্তার কথায়, ভারতের উপর সামরিক আঘাত হানতেই এত কিছু করছে চীন। গত ২২ জুন লেফটান্যান্ট পদমর্যাদার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। ৬ জুনের পর সেটাই ছিল প্রথম লেফটেন্যান্ট পর্যায়ের বৈঠক। তাতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয় বলেও সেনাবাহিনী বিবৃতি দিয়েছিল। কিন্তু তারপর যে একের পর এক উপগ্রহ চিত্র সামনে আসছে তা দেখে অনেকেই বলছেন, চীনের কথায় বিশ্বাস করলে ঠকতে হবে।