আমেরিকার জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের মত এবার ঠিক একইভাবে পুলিশি হেফাজতে নৃশংস অত্যাচার এবং যৌন নির্যাতনে বাবা-ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হল তামিলনাড়ু। ঘটনাস্থল তুতিকোরিন ছাপিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্য সহ গোটা দেশ, এমনকি বিদেশেও। কিন্তু কেন এভাবে পুলিশি অত্যাচার সহ্য করতে হল দুজনকে?
জানা গেছে, লকডাউনের মধ্যে দোকান ১৫ মিনিট বেশি খুলে রাখা নিয়ে গত ১৯ জুন পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে মোবাইলের দোকানি ইম্যানুয়েল বেনিক্স (৩১) ও তাঁর বাবা পি জয়রাজ (৫৮)-এর। কিছুক্ষণের মধ্যে তা মিটে গেলেও পরের দিন সাথানকুলাম থানার সাব-ইনস্পেক্টর বালকৃষ্ণণ এক দল পুলিশ নিয়ে এসে জয়রাজকে গাড়িতে তোলে। অভিযোগ, পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে থানায় পৌঁছলে ইম্যানুয়েলকেও হাজতে ঢোকায় পুলিশ।
ইম্যানুয়েলের বন্ধু রাজেশ জানিয়েছেন, তাঁদের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত বাবা, ছেলে দু’জনকেই বেধড়ক মারে পুলিশ। পরের দিন, অর্থাৎ ২১ জুন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান ইম্যানুয়েলের বন্ধুরা। ইম্যানুয়েলদের আইনজীবী জানান, তখনই তাঁরা দেখেন জয়রাজ এবং ইম্যানুয়েল ভীষণ বাজেভাবে রক্তাক্ত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ও রক্ত বন্ধ হয়নি। তখনই জানা যায়, মারধরের পাশাপাশি পুলিশ তাঁদের উপরে যৌন নির্যাতনও চালিয়েছে। ইম্যানুয়েলের পিঠ থেকে মাংস খুবলে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আনেন তাঁর আইনজীবী।
অভিযোগ, বাবা-ছেলের ওই অবস্থা দেখেও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁদের দুজনকেই ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দেন এবং পুলিশি হেফাজতের অনুমতি দেন ম্যাজিস্ট্রেট! কোভিলপট্টি উপসংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই বাবা-ছেলের অবস্থার আরও অবনতি হয়। বুকে ব্যথা ওঠায় সোমবার রাতে সেখানকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ইম্যানুয়েলকে। রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মঙ্গলবার সকালে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার পরে মারা যান জয়রাজও। এই ঘটনা নিয়েই বর্তমানে উত্তাল তামিলনাড়ু।