গত ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা সেনার সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হন। আহত হন আরও ৭৬ জন। সেদিনের সংঘর্ষের পর থেকেই গোটা দেশ চীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে। দেশজুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। এই পরিস্থিতিতেও মোদী সরকার আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের পক্ষে। তাই গালওয়ানে ভারত-চীন সংঘর্ষের পর সপ্তাহ পেরতে না পেরতেই ফের চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করে ভারত। সোমবার চীনের সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ের সেই বৈঠক ইতিবাচক ও আন্তরিক হয়েছে বলে জানাল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সরকারি বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর তরফে মঙ্গলবার বলা হয়েছে, দুই বাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ের ম্যারাথন বৈঠক ইতিবাচক এবং আন্তরিক।
সীমান্তে যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় উত্তেজনা তুঙ্গে। একে অন্যের চোখে চোখ রাখতে সামরিক প্রস্তুতিও চলছে পূর্ব লাদাখে। তার মধ্যেই উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে গতকাল বৈঠক হয় দুই বাহিনীর মধ্যে। উল্লেখ্য, ৬ জুনের পর এই প্রথম লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্তরে বৈঠক হল ভারত। পূর্ব লাদাখের চুশুলে চিনের দিকে মলদোতে হয় ওই বৈঠক। গালওয়ান সমস্যা-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেসব নিয়েই দুই বাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্তরে আলোচনা হয়। গত সপ্তাহে দু’দেশের সেনাবাহিনী জোড়া বৈঠক করেছিল কিন্তু তাতে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটায় বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত পর্যন্ত।
সেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, আজ মঙ্গলবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে লাদাখে যাবেন সেনা প্রধান এমএম নারাভানে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে যেতে পারেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ। ১৫ জুন রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আগে শেষ বৈঠক হয়েছিল ৬ জুন। যে বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ভারত এবং চীন দু’পক্ষই ওই এলাকা থেকে বাহিনী সরিয়ে নেবে। যে উত্তেজনা সীমান্তে তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে দু’পক্ষই উদ্যোগী হবে। কিন্তু তারপর উত্তেজনা তো কমেইনি বরং চরম সংঘাতের ঘটনা ঘটে যায়। অনেকের মতে, ১৯৬৭ সালের পর ভারতের বিরুদ্ধে চীনা সেনাদের এমন আগ্রাসী রূপ আর দেখা যায়নি।