গত সপ্তাহ থেকে চলতে থাকা লাদাখের বিক্ষিপ্ত যুদ্ধের উত্তাপ বর্তমানে আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। কিন্তু সেই উত্তাপ আবার তৈরি হবে না এমনটা কেউই হলপ করে বলতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে লাদাখে চীনের মোকাবিলা করতে ভারত তিনটি পথে হাঁটতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। লাদাখ সীমান্ত দিয়ে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ও আগ্রাসন রুখতে সেনা মোতায়েন করার পথ তো আছেই, সেইসঙ্গে দেশের ভূমি বেদখল হওয়া রুখতেও ভারত যেই তিনটি পথে হাঁটতে পারে, সেগুলি হল- নজরদারি, যোগাযোগ ও জনসংখ্যা। লাদাখ সীমান্তে ২০ সেনার মৃত্যুর থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে এই তিন ক্ষেত্রেই জোর দেওয়া উচিত বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমত আরও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ভারতকে একটা মজবুত জায়গা দিতে পারে। শক্তিশালী হতে পারে মোকাবিলা। ঠিক যেমন ভাবে ইজরায়েলি সেনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে, ঠিক সেইভাবেই চীনের তথা চীনা সেনার গতিবিধির উপরে নজরদারি চালাতে পারে ভারত। ব্যবহার করতে পারে নাইট-ভিসন ক্যামেরার মতো উন্নত প্রযুক্তি।
একইসঙ্গে থার্মাল ইমেজিং প্রযুক্তি, মোশন সেন্সর ও ডিটেকশন ব়্যাডার এবং সিসমিক সেন্সর ব্যবহার করতে পারে ভারতীয় সেনা। এটা করলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীন কোনওরকম কার্যকলাপ শুরু করলেই ধরা পড়ে যাবে। এই ধরনের নজরদারি চালানো হলে সীমান্তে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাবাহিনী আরও সতর্ক থাকতে পারবে। সীমান্তপারে কোনও রকম অবৈধ কার্যকলাপ দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করতে পারবে। সময় নষ্ট হবে না।
লাদাখ সীমান্তে শক্তিশালী হওয়ার জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে সেখানকার টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা। উঁচু এলাকায় ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক তৈরি করা দরকার। ইতিমধ্যেই সেই কাজটা করে ফেলেছে চীন। গোটা হিমালয় অঞ্চলেই তাদের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক রয়েছে। ভারত সেই যোগাযোগের ক্ষেত্রে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে। উন্নত নেটওয়ার্ক চালু হলে, সীমান্ত এলাকায় বিমানবন্দরও চালু করা যাবে। যার ফলে দেশের অন্য প্রান্ত থেকে প্রয়োজন হলেই অতিরিক্ত বাহিনী দ্রুত তলব করা যাবে। বর্তমান কালে যুদ্ধের সময়ে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয় পথ হল সীমান্ত এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া। প্রত্যন্ত এলাকাতেও জনবসতি গড়ে তুলতে হবে। এটা দেশকে সুরক্ষা দেবে। সেই সঙ্গে চাই ওই সব এলাকায় বিদেশি পর্যটকরা যাতে আসেন সেই বিষয়ে জোর দেওয়া। অনেক বেশি বিদেশি পর্যটককে ট্যুরিস্ট ভিসা দিলে বিশ্বের দরবারে ওই এলাকা যে ভারতের তা প্রমাণ করা আরও সহজ হবে। এখন দেখার বৈঠকে নেওয়া যাবতীয় সিদ্ধান্ত ভারত কতটা কার্যকর করতে পারে।