পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় প্রথমে স্থগিতাদেশ জারি করলেও এদিন শর্তসাপেক্ষে রথ টানার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ভক্ত সমাগম ছাড়াই রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে বলে শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করেছিল কেন্দ্র। জনতাশূন্য রথযাত্রা রাজ্য সরকার নিশ্চিত করলে আপত্তি জানাবে না বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। তবে শুধুমাত্র পুরীর রথযাত্রার জন্যই এই অনুমতি। উড়িষ্যার অন্য কোনও স্থানে রথ বের করা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এরমধ্যেই আগামীকাল, মঙ্গলবার পূর্ণদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। জানা গেছে, আগামীকাল সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান, দফতর বন্ধ থাকবে। যদিও করোনাতঙ্কে গত ৩ মাসে ধরে এমনিতেই স্কুল-কলেজ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে কাল সরকারি কাজকর্ম সব বন্ধ থাকবে রথের ছুটি উপলক্ষে।
এদিকে, পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা নিয়ে টানাপোড়েন মিটলেও, এবছর মাহেশের রথের চাকা স্তব্ধই থাকছে। করোনার কোপে ৬২৪ বছরে প্রথমবার মাহেশের রথের রশিতে পড়বে না টান। ইসকনও এবার রথযাত্রা করছে না। বরং ডিজিটাল স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে ভার্চুয়াল রথযাত্রায় শামিল হতে ভক্তদের জন্য বন্দোবস্ত করেছে ইসকন কর্তৃপক্ষ। রথযাত্রা না হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের বিভিন্ন রথযাত্রা কমিটি এবার মেলাও বসাতে পারছে না। যা নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে রাজ্যের কয়েক লক্ষ মেলাকর্মী। মেলায় দোকান-পসরা সাজিয়েই যাদের বছরভর রোজগার তাঁদের জীবন-জীবিকা আজ প্রশ্নের মুখে।
উৎসবপ্রেমী বাঙালির কাছে আরও একটি কারণে রথের মাহাত্ম্য রয়েছে। সেটা হল, কথায় আছে, রথ টানলেই দুর্গা আসে। এই রথযাত্রার দিনই শারদোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে যায় বলা চলে। কারণ, এইদিনই প্রতিমার কাঠামো পুজো হয়। বহু বারোয়ারি পুজো কমিটি এইদিন খুঁটিপুজো করে দু্র্গোৎসবের প্রস্তুতি শুরু করে। আচার-উৎসব, সবদিক থেকেই রথের গুরুত্ব বাঙালির জীবনে অপরিসীম। সেই ঐতিহ্যের রথযাত্রায় এবছর থাবা বসিয়েছে করোনা। তবে রথযাত্রা পালন না হলেও, সরকারি কর্মচারীদের রথের পাওনা ছুটি থেকে বঞ্চিত করছেন না মুখ্যমন্ত্রী।