গত ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনা সেনার সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হন। আহত হন আরও ৭৬ জন। সেদিনের সংঘর্ষের পর থেকেই গোটা দেশ চীনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে। দেশজুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধ যুদ্ধ রবও উঠছে। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়াল কংগ্রেস জমানার এক রিপোর্ট। শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি ডোকলাম কাণ্ডের পরই জানিয়েছিল, চীনের ওপর ভরসা না করতে। তাদের পরামর্শ ছিল, সম্পর্ক ভাল রাখলেও সব সময়ই কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখা হোক জি শিনপিং সরকারকে। বিদেশ মন্ত্রকের সেই সংসদীয় কমিটির সামনে ২০১৭-র অক্টোবরে তৎকালীন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, ‘কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলতেই থাকবে।’ তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘আমরা সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরি করছি। সে কারণেই যে যে ক্ষেত্রে ওরা উদ্বিগ্ন, সেই ক্ষেত্রে কিছুটা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলতে থাকবে।’ এবার গালওয়ান কাণ্ডের পর, সংসদীয় কমিটির সেই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই আক্রমণ শানাচ্ছে কংগ্রেস।
দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সেই সময়ই চীন নিয়ে সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, সচেতন ভাবেই ভারতকে ঘিরে ধরার পরিকল্পনা নিয়ে চলছে বেজিং। তারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চায়। কংগ্রেসের বক্তব্য, কমিটির পরামর্শে আমল দেওয়া হয়নি মোদী সরকারের পক্ষ থেকে। প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের ওই কমিটির বক্তব্য ছিল, দু’দেশের সেনার মধ্যে একটি সামগ্রিক সীমান্ত-সংযোগ চুক্তি করার অবিলম্বে প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ডোকলামের অচলাবস্থা কেটে যাওয়ায় তখন চীন প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় ছিল দিল্লী, তাই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এমনই অভিযোগ বিরোধীদের। ২০১৭-র ৩০ অক্টোবর ওই কমিটিকে জয়শঙ্কর জানান, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে দু’দেশের ধারণার ফারাক রয়েছে। আর তার থেকেই যত বিপত্তি। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, ধারণার ফারাক নয় মোটেই। এটা ভূখণ্ডের আগ্রাসন ছাড়া কিছুই নয়। কারণ গালওয়ানকে নিজেদের সার্বভৌম এলাকা বলে দাবি করছে চীন, যা ১৯৬২-এর যুদ্ধের পর থেকে আজ পর্যন্ত কখনও করা হয়নি।