লকডাউনের জেরে স্থগিত রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ইএমআই। এবার সেই ইএমআইয়ের উপর সুদ আদায় নিয়ে কেন্দ্র ও ব্যাঙ্কগুলিকে রীতিমত তুলোধোনা করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের সাফ কথা, কেন্দ্র ঋণের তিন মাসের ইএমআই স্থগিত রাখার কথা বলেছিল। তাই কেন্দ্র এখন সেই দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না। ফলে বুধবারও ঋণের স্থগিত সুদের উপর সুদ নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে এ নিয়ে ফের শুনানির দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রকে আলোচনায় বসে সমাধান সূত্র বের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মার্চ মাসের ২৭ তারিখ ইএমআই স্থগিত রাখার বিষয়টি ঘোষণা করেন আরবিআই-র গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা এবং আর্থিক বৃদ্ধি সচল রাখতে এই পদক্ষেপ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর ফলে লকডাউনের জেরে ঘরে বসে থাকা কোটি কোটি দেশবাসী স্বস্তি পাবে। তাঁর ঘোষণার পরই তৎপরতা দেখায় দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্ক। কিন্তু কয়েকদিন আগেই ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তি স্থগিত করা সংক্রান্ত একটি মামলা হয় শীর্ষ আদালতে।
অভিযোগ ওঠে স্থগিত থাকা ইএমআই-র উপর আরও সুদ চাপাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। ফলে গ্রাহকরা চূড়ান্ত সমস্যা পড়ছেন। লকডাউন আবহে ঋণের মোরেটোরিয়ামে সুদের উপর সুদ নেওয়া হবে কেন, বুধবার ফের এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে ব্যাঙ্কগুলি। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, ‘এনপিএ-তে হাজার হাজার কোটি ছাড়। কিন্তু কয়েক মাসের সুদ মকুব করা যাচ্ছে না? ব্যাঙ্ক ও গ্রাহকের বিষয় বলে দায় ঝাড়তে পারে না কেন্দ্র।’
বিচারপতি অশোকভূষণ, বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল ও বিচারপতি এমআর শাহের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চের মতে, কেন্দ্র যদি মকুব ঘোষণা করে থাকে, তাহলে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তার সুফল যেন গ্রাহকরা পান। নিশ্চিত করতে হবে যে, ছাড়ের সুবিধা যেন ঠিকমতো প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, ব্যাঙ্কের তরফে পাল্টা যুক্তি দিয়ে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা জানান, ‘ঋণের সুদ না নিলে খারাপ প্রভাব পড়বে। গ্রাহকদের জমার উপর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি।