ভারতের সর্বকালের সেরা তিন বিদেশি কোচের তালিকায় প্রথম সারিতেই থাকবেন গ্যারি কার্স্টেন। ২০০৯ সালে তাঁর কোচিংয়ে ‘টিম ইন্ডিয়া’ আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছিল। তার ঠিক দু’বছর পর মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ‘মেন ইন ব্লু’। আর সেই সাফল্যের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেছিলেন কার্স্টেনই। মাত্র ৭ মিনিটেই ভারতের কোচ হয়েছিলেন তিনি।
কীভাবে গ্রেগ চ্যাপেলের জায়গায় তিনি ভারতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই রহস্য উন্মোচন করেছেন গ্যারি। তিনি জানিয়েছেন, ‘হঠাৎ একদিন দেখি সুনীল গাভাসকর মেল পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন, আমি ভারতীয় দলকে কোচিং করানোর ব্যাপারে আগ্রহী কী না। প্রথমে ভেবেছিলাম ভুয়ো মেল। উত্তর দিইনি। পরে আবার আমাকে একটা মেল পাঠান গাভাসকর। জানতে চান, আমি ইন্টারভিউ দিতে আসছি কী না। সত্যি বলতে কী, সেই সময় কোচিং করানোর কোনও পরিকল্পনাই আমার ছিল না। তার উপর ভারতের মতো হাইপ্রোফাইল দলকে কোচিং করানোর প্রস্তাব পেয়ে একটু অবাকই হয়েছিলাম। স্ত্রীকে মেলটা দেখানোর পর ও আমাকে বলে, ‘ওরা হয়তো ভুল লোককে আমন্ত্রণটা পাঠিয়েছে।’
যাই হোক, কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই সেদিন কোচের পদে ইন্টারভিউ দিতে ভারতে উড়ে এসেছিলেন গ্যারি কার্স্টেন। সেই সময় কোচ নির্বাচনের প্যানেলে সানি ছাড়াও ছিলেন বর্তমানে বিরাট কোহলিদের হেড স্যার রবি শাস্ত্রী। আসলে গ্রেগ চ্যাপেলকে সরানোর পর প্রশ্ন উঠেছিল, ওই ডামাডোলের বাজারে কে নেবেন শচীন তেন্ডুলকরদের দায়িত্ব। এই সময় মূলত গাভাসকরই গ্যারির নাম প্রস্তাব করেন।
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন তারকাটি জানিয়েছেন, ‘ইন্টারভিউয়ের শুরুতেই বিসিসিআই সচিব আমাকে প্রেজেন্টেশন দিতে বলেন। আমি সটান জানিয়ে দিই, আমাকে তো কোনও কিছু তৈরি করে আনতে বলা হয়নি। পরিস্থিতি হালকা করার জন্য রবি শাস্ত্রী তখন আমার উদ্দেশ্যে বলেন, ভারতকে হারানোর জন্য তোমরা কী করতে? আমি বুঝে গিয়েছিলাম, উনি পরিস্থিতিটা হালকা করতে চাইছেন। সেই সুযোগ লুফে নিয়েছিলাম। স্ট্র্যাটেজি না জানিয়েও দু’তিন মিনিট ধরে এ বিষয়ে বক্তব্য রেখেছিলাম। আর তাতেই খুশি হয়ে যান ইন্টারভিউ বোর্ডের সকল সদস্য। কথার ফাঁকে হঠাৎ আমার দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দেন বিসিসিআই সচিব। জিজ্ঞাসা করি, এটা কি? জবাবে উনি বলেন, চুক্তিপত্র।
গ্যারি জানাচ্ছেন এই সম্পূর্ণ কাজটা ৭মিনিটের মধ্যেই হয়ে গিয়েছিল। আর বাকিটা তো সারা বিশ্ব জানে।