কোভিড আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধির মধ্যেই মারণ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আরও একটি নতুন দরজা খুলে গেল কলকাতায়। আর এই পথেই সবচেয়ে বেশি বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে শহরের পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার, পুর-সাফাইকর্মী ও ফুটপাথবাসীদের। করোনা সংক্রমণের নয়া বাহক হল মহানগরের রাজপথে প্রতিদিন ফেলে দেওয়া হাজার হাজার ব্যবহৃত নানা ডিজাইনের মাস্ক।
পরিত্যক্ত মাস্ক থেকে যে নতুন করে শহরে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে তা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রাস্তায় পড়ে থাকা মাস্ক নিয়ন্ত্রণ ও নীতি চূড়ান্ত করতে সোমবার পুরভবনে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যপ্রশাসক।
ফিরহাদের কথায়,“আইন করে ব্যবহৃত মাস্ক যত্রতত্র ফেলতে নিষেধ করলেই হবে না, মানুষকে বিকল্প সুরহা দিতে হবে। বিদেশে বা দেশের অন্য মহানগরে কীভাবে ব্যবহৃত মাস্ক নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে তা জেনেই কলকাতায় নীতি চূড়ান্ত হবে।”
রাস্তায় নানা ধরনের ডিজাইনের সুন্দর সুন্দর মাস্ক পড়ে থাকতে দেখে অনেক ফুটপাথবাসী বা গরিব মানুষ কুড়িয়ে নিয়েও ব্যবহার করছে। কেউ যদি রাস্তা থেকে এমন মাস্ক নিয়ে ব্যবহার করেন তবে করোনাকে সঙ্গে নিয়ে রাতে ঘুমনোর মতো সর্বনাশা সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন প্রখ্যাত পালমোনলজিস্ট ডাঃ রাজা ধর।
প্রত্যক্ষদর্শী গড়িয়াহাট মোড়ের হকার রমেশ নস্করের কথায়,“নতুন মাস্ক কিনে অনেকেই পুরনোটা ছুঁড়ে ফুটপাতের ধারে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।” মুখে ঘাম হওয়ায় বিরক্তিতে ব্রডস্ট্রিটের নার্সিংহোমের সামনে আয়াকে মাস্ক ফেলে মুখে রুমাল বাঁধতে দেখেছেন পরিচিত হার্ট সার্জন। করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির ফেলে দেওয়া মাস্ক শুধু একজন নয়, অনেকের দেহেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে।
নিউমার্কেট, বউবাজার ও গড়িয়াহাট থানার পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, অফিসযাত্রীরাই বেশি মাস্ক ফেলে চলে যাচ্ছেন। কেউ অনিচ্ছাকৃত, কেউ আবার অফিস থেকে রাজ্য সরকার নতুন মাস্ক দিতেই পুরনোটা গাড়ির জানলা দিয়ে ফেলছেন।