প্রথমত করোনার থাবায় বেহাল অবস্থা দেশের অর্থনীতির। এরই সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার সামিল টানা ৭ দিন জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম হুড়মুড়িয়ে নামলেও লাগাতার ভাবে ভারতে বেড়ে চলেছে তেলের দাম। আপাতদৃষ্টিতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ায় বড়লোকের মোটরগাড়ির কথা মাথায় এলেও, তেলের দাম বাড়লে দাম বাড়ে পণ্য পরিবহনের। ফলে দাম বাড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। এখানে ধনী-গরীবের ফারাকটা থাকে না। পকেট কাটা পড়ে দুই পক্ষেরই। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লে ধাক্কাটা সবচেয়ে বেশি খায় গরিব। দেশজোড়া করোনা পরিস্থিতির মাঝে লাগাতারভাবে ইচ্ছাকৃত তেলের দাম এভাবে সরকার বাড়িয়ে রাখায় এবার সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াল কংগ্রেস।
পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির জেরে সরকারকে এক হাত নিতে এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তিনি বলেন, দেশের কঠিন পরিস্থিতিতেও সরকার নিজের খাজনা ঠিক তুলে নিচ্ছে। কিন্তু বোঝা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। সিব্বলের কথায়, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদী তৎকালীন কংগ্রেস সরকারকে তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে তুলোধোনা করেছিলেন। সরকার নিষ্কর্মা-অসফল এই ধরনের মন্তব্য করতেও ছাড়েননি। অথচ তাঁর শাসনে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম শূন্যে নামলেও ভারতে তেলের দাম ক্রমশ বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়। এ প্রসঙ্গে মোদীর এক মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই তাঁকে পাল্টা দিয়েছেন সিব্বল।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনে উনি বলেছিলেন, ‘আমি ভাগ্যবান এবং এর ফলে জনগণের সুবিধা হয়। তাই সৌভাগ্যবানকেই ভোটটা দেওয়া উচিত।’ মোদীর এই মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে এদিন সিব্বল বলেন, ‘এখন তো আপনি আর ভাগ্যবান নন কারণ জনগণের বোঝা বাড়ছে। সরকারের দুর্ভাগ্য দশা চলছে এবং সে জনগণকে লুট করছে। এখন আপনি জবাব দিন কেন এমনটা হচ্ছে?’ উল্লেখ্য, বর্তমানে পেট্রোল করের দিক থেকে গোটা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত(বাংলাদেশের পর)। পেট্রোল-ডিজেলের মূল দামের ওপর ৬৯ শতাংশ কর আদায় করছে সরকার। শনিবার ফের পেট্রোলের দাম ৫৯ পয়সা এবং ডিজেলের দাম ৫৮ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। ফলে বর্তমানে পেট্রোলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৫ টাকা ১৬ পয়সা এবং ডিজেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৩ টাকা ৩৯ পয়সা।