ছয় বছরের শাসনকালে সম্ভবত প্রথমবার। ক্রমশ পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরাগভাজন হয়ে পড়ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা সুবিশাল অংশ ছিল তাঁরই অনুগামী। কিন্তু বিগত কয়েকমাসের ঘটনাবলির জেরে দেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে মোদীর সেই আত্মিক বাঁধন ক্রমশ ছিন্ন হয়ে আসছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করার জেরে এমন কয়েক কোটি মানুষ রয়েছেন যারা রাতারাতি বেকার হয়ে যান। তাদের রোজগার বন্ধ হয়ে যায়, পেটের ভাত-রুটি জোগানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। প্রাথমিকভাবে এই নিয়ে বেশি কেউ উচ্চবাচ্চ না করলেও সময় যত বাড়ছে, রোজগারহীন সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে তাদের আরাধ্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও আনুগত্য কমতে শুরু করেছে।
‘উনি কেন আমাদের সঙ্গে এমনটা করলেন?’ জিজ্ঞেস করছেন জাম্মুন ঝাঁ নামের এক মহলা। যিনি নয়ডায় একটি কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। ৫০ বছর বয়সী এই মহিলা ২৯ মে থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁর বাড়ি বিহার ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোনও সরকারি সাহায্য তিনি পাচ্ছেন না। তিনি নিজে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন স্বীকার করলেও এটা জানাতে ভুললেন না, ‘এবার মোদী সরকার আমাদের জন্য তেমন কিছু করলই না।’ যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে তারা গিয়েছেন তা খুব সহজে ভুলবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
গোটা দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ১০ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে বলে খবর। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই পেটে লাথি পড়েছে লকডাউনে। তার থেকে বড় বিষয়, খুব কম মানুষই সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যা সামলাতে গিয়ে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলেই অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। যার প্রভাব ২০২৪ সালের ভোটে বড় আকারে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।