আনলক শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে খাতায় কলমে লকডাউন ৫ চলছে। সেই লকডাউন জারি আছে যে আইনের বলে তা হল মহামারী আইন। দেশে এর আগে এই আইন খুব একটা লাগু হয়নি। এমনকী এই আইনের মধ্যে দেশে কোনওদিন নির্বাচনও হয়নি। কিন্তু এবার এই আইনের সাময়িক শিথিলতা চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কারণ পুজোর আগেই তাঁরা পুরনির্বাচন সেরে ফেলতে চাইছেন। পাশাপাশি শুরু করতে চাইছেন আগামী বছরের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিটাও। কিন্তু মহামারী আইন শিথিল না হলে সেটা সম্ভব নয়। তাই খুব শীঘ্রই রাজ্য সরকারকে এই আইন শিথিল করার বিষয় নিয়ে চিঠি পাঠাতে চলেছে কমিশন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে যখন জনতা কার্ফুর মধ্যে দিয়ে লকডাউন পর্ব শুরু হয় তখন শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছিল কলকাতা পুরনিগম-সহ রাজ্যের শতাধিক পুরসংস্থার নির্বাচন। লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় এই সব পুরসংস্থার নির্বাচন আর অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই রাজ্য সরকারের তরফে ওই সব পুরসংস্থায় বসানো হয়েছে প্রশাসকমন্ডলী। তাঁরাই এখন ওই সব পুরসংস্থার কাজকর্ম পরিচালনা করছেন। কিন্তু এভাবে কতদিন চলবে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন চাইছে পুজোর আগে এই মহামারী আইন শিথিল করে কলকাতা পুরনিগম-সহ রাজ্যের অনান্য পুরসংস্থাগুলিতেও নির্বাচন হয়ে যাক। তাতে এই রকমের পরিস্থিতিতে ভোট করা যাবে কিনা সেটা যেমন দেখে নেওয়া যাবে তেমনি বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটা নির্বাচনী লড়াইয়ের মাঠও তৈরি করে নেওয়া যাবে। কোথায় কী ধরনের খামতি থাকছে তা দেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিটা করে নিতে পারবে।
রাজ্য সরকারকে মহামারী আইন শিথিলতার জন্য চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন চাইছে একটা সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে সব রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নিতে। বিশেষ করে প্রচারের ক্ষেত্রে কতটা ছাড় দেওয়া যেতে পারে ভিড় এড়াতে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে চায় কমিশন। এরই পাশাপাশি তাঁরা ভোট কীভাবে হবে তা নিয়েও আলোচনা চালাতে চায়। মানে ইভিএমে না ব্যালট পেপারে। যদিও রাজ্য সরকার চায় ভোট হোক ব্যালট পেপারে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন অবশ্য ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের ব্যাবস্থা রাখছে। তবে রাজ্য সরকার ব্যালট পেপারে ভোট চাইলে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিরোধের পথে নাও হাঁটতে পারে।