অফিস কর্মচারী থেকে সাধারণ ব্যবসায়ী- মুম্বইয়ের বহু বাসিন্দাকেই কাকভোরে বাড়ি ছাড়তে হয় রোজগারের তাগিদে। ট্রেনে বাসে সফর করে বহু দূরের অফিসে পৌঁছাতে হয়। অত ভোরে বাড়িতে রান্না হয়ে ওঠে না। বাইরে খেলে অতিরিক্ত পয়সা খরচ। এখানেই মুশকিল আসান হয়ে ওঠেন একদল মানুষ। যাঁদের পরিচয় ডাব্বাওয়ালা। কর্মব্যস্ত মুম্বইয়ের অতি পরিচিত ছবির মধ্যে অন্যতম অবশ্যই খাবার বিলি করতে ব্যস্ত এই ডাব্বাওয়ালাদের তত্পরতা। দিনের পর দিন মুম্বই শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত লাঞ্চ বক্স নিয়ে অফিস থেকে অফিস ছুটে বেড়ান ধোপদুরস্ত এই মানুষগুলি।
কিন্তু করোনার থাবা বদলে দিয়েছে এই চেনা পরিচিত চিত্রটা।
এক ঝটকায় যেন বদলে গেল এই সব ডাব্বাওয়ালাদের শান্তির জীবন-জীবিকা। প্রায় ১২৫ বছরের পুরনো ধারা যেন এক লহমায় নিঃশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। করোনা ধীরে ধীরে থাবা প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে সিংহভাগ অফিস, স্কুল, কলেজই ওয়ার্ক ফ্রম হোম শুরু করে দিয়েছে। তাই প্রায় তিন মাস ধরে কোনও রোজগার নেই এই সব ডাব্বাওয়ালাদের। কোনওরকমে জমানো টাকা দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সংসার। যদিও ইতিমধ্যে শর্ত সাপেক্ষে খুলতে শুরু করেছে বহু অফিস। তবে সেখানে আসছেন মাত্র ১০ শতাংশ কর্মী। লকডাউন হওয়ার আগে যেখানে দিনে প্রায় ২ লাখ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতেন তাঁরা। কারণ এখনও চালু হয়নি লোকাল ট্রেন। কবে চালু হবে তা নিয়েও নেই কোনও নির্দিষ্ট ধারণা। তাই এখনও কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না ডাব্বাওয়ালারা। লকডাউন ধাপে ধাপে উঠলেও তাঁদের জীবনে আবার কবে সুদিন আসবে, তা নিয়ে তাঁরা নিজেরাও সন্দিহান।