করোনার তাণ্ডব শুরুর আগে থেকেই মন্দার জেরে ধুঁকছিল ভারতীয় অর্থনীতি। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার সামিল হয়েছে সংক্রমণ রুখতে জারি করা লকডাউন। এই দুইয়ের প্রকোপে ধুঁকছে দেশের অর্থনীতি। স্তব্ধ শিল্পোৎপাদন। আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে। গত ১১ বছরে সর্বিনম্ন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বাস, ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি। কিন্তু সমীক্ষা অন্য কথাই বলছে। দেশের ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রধানদের এক তৃতীয়াংশ ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছেন না। কারও মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে দু’ থেকে তিন বছর।
অল ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইএমও) কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে মিলে একটি সমীক্ষা চালায়। ২৪ থেকে ৩০ মের মধ্যে ৪৬ হাজার ৫২৫টি ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্পের প্রধান এবং স্বনিযুক্ত, কর্পোরেট সংস্থার সিইও, কর্মীদের মতামত নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। অবশ্যই অনলাইনে। তাতেই উঠে এসেছে কিছু তথ্য। ৩৫ শতাংশ ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প সংস্থা এবং ৩৭ শতাংশ স্বনিযুক্ত ব্যক্তি এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ছেড়েছেন। তাঁদের ব্যবসা যে ফের চাঙ্গা হবে, মনে করছেন না। ৩২ শতাংশ ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প সংস্থা মনে করে, ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াতে অন্তত ছ’ মাস লাগবে। মাত্র ১২ শতাংশ সংস্থা মনে করে, আগামী তিন মাসে ফের চাঙ্গা হবে তাদের ব্যবসা। মূলত কর্পোরেট কর্তারাই এ রকম ইতিবাচক মনোভাব রাখছেন।
এআইএমও-র প্রাক্তন সভাপতি কে এন রঘুনাথন শুধু করোনাকে এর জন্য দোষ দিতে নারাজ। তাঁর মতে, নোটিবাতিল, জিএসটি এবং গত তিন বছরের আর্থিক মন্দার কারণে আগে থেকেই মার খাচ্ছিল ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প। কফিনে শেষ পেরেক ঠুকল করোনা ভাইরাস এবং লকডাউন। এখন শিল্পোৎপাদন বন্ধ। ভবিষ্যতে বরাত পাবে কিনা, নিশ্চয়তা নেই। এই বিষয়গুলোই ভাবাচ্ছে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি সংস্থাগুলোকে। তিনি মনে করেন, স্বাধীনতার পর থেকে এত দুর্দিন দেখেনি ভারতের ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি সংস্থাগুলো।