লকডাউনের মধ্যেই দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বর্ষপূর্তি হল নরেন্দ্র মোদী সরকারের। আর সেই দিনেই দেশবাসীর উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, ‘আমাদের শ্রমিক, পরিযায়ী শ্রমিক, হস্তশিল্পী ও ক্ষুদ্র শিল্পের কারিগর, হকার বন্ধুরা সহ প্রতিটি দেশবাসী চূড়ান্ত সমস্যার মধ্যে রয়েছেন।’ দেশজুড়ে চলতে থাকা লকডাউনের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের যে বিপুল সমস্যায় পড়তে হয়েছে, তা অবশেষে মেনে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদী চিঠিতে এ কথা বললেও তাঁর দল এবং মন্ত্রীরা কিন্তু সে সবে পাত্তা দিতে নারাজ। বরং তাঁরা আজ দেশজুড়ে মূলত ডিজিটাল মাধ্যমের হাত ধরে সাড়ম্বরে দিনটি পালন করেছেন। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বলছে, দেশ জুড়ে যখন পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তায় হাঁটছেন, বহু লোক করোনায় মারা যাচ্ছেন, অর্থনীতি তলানিতে নামার নিত্যনতুন রেকর্ড গড়ছে, সেখানে মোদী সরকার কী ভাবে বর্ষপূর্তির সাফল্য উদ্যাপন করে? যদিও এ প্রশ্নের উত্তর দেয়নি বিজেপি। উল্টে পরিযায়ী শ্রমিকদের মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার দাবি তোলায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে ‘বক্রদ্রষ্টা’ বলে বিদ্রুপ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্য শুনে ক্ষুব্ধ রাজনৈতিক মহল।
দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বছরে মোদী সরকার মূলত বিজেপি-আরএসএসের কর্মসূচি রূপায়ণেই মন দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কংগ্রেস বলেছে, স্বাধীনতার পর থেকে গড়ে ওঠা একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকে বিক্রি করে দেশের সর্বনাশ করেছে মোদী সরকার। ফলে তাদের ভুল সংশোধনের দাবি হাস্যকর। মোদী জমানার ভুলের মাসুল গুণতে হচ্ছে গোটা দেশকে। আগামী দিনেও হবে।
এদিকে বর্ষপূর্তির ২৪ ঘণ্টা আগেই খবর এসেছে, লকডাউনের আগেই আর্থিক বৃদ্ধির হার এতখানি নীচে নেমেছে, যা ২০০৮-এর বিশ্বজোড়া আর্থিক সঙ্কটের পরে হয়নি। লকডাউনের আগেই নতুন লগ্নি ও বাজারের চাহিদা নিম্নগামী। এর ফলে আগামী দিনে অর্থনীতির হাল কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস আজ সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী সরকার সম্পর্কে ছ’টি মিথ ও ছ’টি বাস্তব তুলে ধরেছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘মোদী ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। আগেই বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ ছুঁয়ে ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। এখন গোটা দেশে বেকারত্বের হার ২৭ শতাংশেরও বেশি।’