একে করোনার সংক্রমণ। তার উপর খাঁড়ার ঘা লকডাউন। কাজ হারিয়ে শেষমেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। গত কয়েকদিনে উত্তরপ্রদেশে তিন পরিযায়ী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে খবর। এই ঘটনায় শনিবার কেন্দ্র সরকারকে তুলোধনা করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে আত্মঘাতী পরিযায়ী শ্রমিকের সুইসাইড নোটটি পোস্ট করে কংগ্রেস নেত্রীর কটাক্ষ, ‘কেন্দ্র সরকার বর্ষপূর্তি পালনে ব্যস্ত। তাই এই মানুষগুলির কান্না তাঁদের কানে পৌঁছবে না।’
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, গত এক সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশে আত্মঘাতীয় হয়েছেন তিন পরিযায়ী শ্রমিক। শুক্রবার মঙ্গলগঞ্জ স্টেশনের কাছে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন ভানু প্রকাশ গুপ্তা নামের এক পরিযায়ী শ্রমিক। খেরি জেলায় বয়স্ক মাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। শাহজাহানগঞ্জের একটি হোটেলে কাজ করতেন ভানু। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট থেকে জানা গিয়েছে, লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছিলেন তিনি। হাতে নগদের টান রয়েছে। উপরন্তু ক্রনিক রোগেও ভুগছিলেন। শেষপর্যন্ত মা ও নিজের খরচ চালাতে না পেরে আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে খেরি জেলার জেলাশাসক শৈলেন্দ্র কুমার সিং জানান, ভানু ও তাঁর মা দুজনেই অন্ত্যোদয় যোজনায় খাদ্যশস্য পাচ্ছিলেন। এদিকে লোহার গ্রামে বুধবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন দিল্লী থেকে ফেরা শ্রমিক সুরেশ। তিনি পাঁচদিন আগে দিল্লী থেকে বাড়ি এসেছিলেন বলে খবর। আবার, নিজের ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মু্ম্বই থেকে ফেরা মনোজ। তাঁরও হাতে কাজ ছিল না বলে বলে জানা গিয়েছে।
একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনায় কেন্দ্র সরকারের তুমুল সমালোচনা করেন উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘ভানু প্রকাশ কাজ হারিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন। তাঁর ও তাঁর মায়ের চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওঁরা শুধু বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছিলেন। ওঁদের চিঠি বলে দিচ্ছে, ওঁদের আরও অনেক জিনিসের প্রয়োজন ছিল। সরকারের তা জোগান দেওয়া দরকার ছিল।’ এরপরই মোদী সরকারের এক বছরের পূর্তিকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেত্রী লেখেন, ‘এই চিঠি আজ হয়ত আপনাদের কাছে পৌঁছবে না। আজ সরকারের একবছরের পূতি পালনে ব্যস্ত আপনারা। কিন্তু সময় করে চিঠিটা পড়বেন।’ এরপরই প্রিয়াঙ্কার আক্ষেপ, ‘দেশের আরও অনেক মানুষ একইভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।’