গতকাল প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক ডেকেও নজিরবিহীনভাবে অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারল না আইসিসি। সম্পূর্ণ ক্রিকেট বহির্ভূত কারণে সেই ঘোষণা পিছিয়ে দিল সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। আইসিসির পর্যবেক্ষণ, বিভিন্ন দেশের বোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে কী আলোচনা হচ্ছে, সেই খবর সংবাদমাধ্যমে বেরিয়ে পড়ছে। গোপন ই-মেল ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। তাই আইসিসি ঠিক করেছে, আগে তদন্ত করে দেখা হবে কী ভাবে ভিতরকার খবর বেরিয়ে পড়ছে। তারপরেই ক্রিকেট নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন দেশের বোর্ড প্রধানদের নিয়ে ডাকা ভিডিও কনফারেন্সের পুরোটাই এ নিয়েই চর্চা চলল। রাতের দিকে আইসিসি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েও দিয়েছে, আলোচনার গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না বলে সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার জন্য নিয়ামক সংস্থার এথিক্স অফিসারকে দিয়ে কালকেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
যদিও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্ট করে কোনও দেশের নাম করা হয়নি, অনুমান করা হচ্ছে, শশাঙ্ক মনোহরের আইসিসি আঙুল তুলছে ভারতেরই দিকে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ‘ভারতের কয়েকটি সংবাদপত্রে বেশ কিছু খবর ফাঁস হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে ভিতরকার আলোচনা এবং আইসিসি বনাম ভারতীয় বোর্ডের মধ্যে ই-মেল চালাচালি ফাঁস হয়ে গিয়েছে।’ সেই কারণেই মনোহরের নেতৃত্বে আইসিসি আগে এই খবর ফাঁস হওয়ার এসপার-ওসপার চায়।
আইসিসি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ১০ জুন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিচ্ছে। তাদের সেই বক্তব্য জানাজানি হওয়ার পরে সর্বস্তরে বিস্ময়ই সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছেন যে, করোনা ভাইরাস অতিমারির জেরে বিশ্বকাপের ভাগ্য নিয়ে না ভেবে খবর ফাঁস হওয়া নিয়ে কেন রাতের ঘুম নষ্ট করছে ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা? অলিম্পিক্স পিছিয়ে গিয়েছে, ইউরো এবং কোপা আমেরিকা ফুটবল পিছিয়ে গিয়েছে। তা হলে আইসিসি কেন গড়িমসি করছে বিশ্বকাপের ঘোষণা করতে?
শোনা যাচ্ছে, টিভি স্বত্ব কিনে রাখা ভারতীয় সংস্থাও বিশ্বকাপ নিয়ে টালবাহানায় একদমই খুশি নয়। একই সংস্থার হাতে রয়েছে আইপিএলের টিভি স্বত্বও। টি-২০ বিশ্বকাপ না-হলে আইপিএলের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে চাইবে তারা। শোনা যাচ্ছে, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডও চাইছে, এ বছরের বিশ্বকাপ পিছিয়ে ২০২১ বা ২০২২-এ তাদের দেশেই আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হোক। সভার সিদ্ধান্ত যতই মুলতবি রাখা হোক, বিশ্বকাপের আকাশ সেই মেঘাচ্ছন্নই।