বেলুড়ে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে থাকা গাছের ডাল সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দমকল কর্মী সুকান্ত সিংহরায়ের (২৮)। অভিযোগ, গাছ কাটার আগে সিইএসসি জানিয়েছিল, ওই এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। কিন্তু আদতে হয়নি। বিদ্যুতের ছোবলেই মারা যান বালি দমকল কেন্দ্রের কর্মী সুকান্ত। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁদের গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটল তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। এর পরই গাফিলতির অভিযোগ তুলে সিইএসসি–র বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। ওই বিদ্যুৎ সংস্থার ৩ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বেলুড় থানার পুলিশ। আটক করা হয়েছে সিইএসসি-র একটি গাড়িও। খবর পেয়ে বালির দমকল কার্যালয়ে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
এই প্রসঙ্গে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রথমে সিইএসসি ঠিক তথ্য দেয়নি। আমি মনে করি, সুকান্তর এই মৃত্যু একটি ক্রিমিনাল অফেন্স। এটা ক্রাইম। এর পেছনে যারা রয়েছে তাদের খুব তাড়াতাড়ি গ্রেপ্তার করা উচিত।’ মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ও পরিবারের কোনও এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টাকা জীবনের বিকল্প হতে পারে না। আমি গভীর সমবেদনা জানাই। সুকান্তর মৃত্যুতে আমি সত্যিই শোকস্তব্ধ।’
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘সিইএসসি–র চূড়ান্ত গাফিলতি। মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে। তিনি কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সিইএসসি–র বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। গাফিলতিতে জড়িত কাউকেই রেয়াত করা হবে না।’
প্রসঙ্গত, উম্পুনের তাণ্ডবের জেরে বিদ্যুতের তারে পড়ে থাকা গাছের ডাল সরাতে এদিন বেলুড়ের গাঙ্গুলি স্ট্রিটে যান দমকল কর্মীরা। তার আগে সিইএসসি-কে জানানো হয়েছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে জানতে পেরেই হুগলির তারকেশ্বরের বাসিন্দা সুকান্ত মই বেয়ে গাছের ডাল সরাতে ওঠেন। তখনই আচমকা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারান সুকান্ত। সহকর্মীরা দ্রুত তাঁকে টি এল জয়সোয়াল হাসপাতাল হয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। সিইএসসি–র বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এফআইআর করা হয়েছে।’