করোনা সংক্রমণ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে যে ধরনের সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম দেখা যাচ্ছে রোগীদের মধ্যে, সেই রোগ সারাতে কাজে দেবে এই ভেন্টিলেটর। শ্বাসের গতি মাপবে আবার চটপট অক্সিজেনও পৌঁছে দেবে। এমনই এক ভেন্টিলেটর বানালেন ভারতীয় বংশোদূত জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধীনস্থ জর্জ ডব্লিউ উডরাফ স্কুল অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ডক্টর দেবেশ রঞ্জন। এই গবেষণায় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন স্ত্রী কুমুদা রঞ্জন। এই ভেন্টিলেটর চলবে বিদ্যুৎ ছাড়াই। কম খরচে এমন ভেন্টিলেটর দেশের বাজারে আনতে চলেছেন আমেরিকা নিবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক দম্পতি।
এমন পোর্টেবল, আধুনিক ভেন্টিলেটরের দাম সাত লক্ষ টাকার কাছাকাছি। কিন্তু সাত হাজার টাকারও কম দামে এই ভেন্টিলেটর পৌঁছে দেওয়া হবে ভারতের হাসপাতাল, নার্সিংহোম ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বলেছেন গবেষক দেবেশ। তিনি জানান, “সব রকম আধুনিক সুবিধাযুক্ত এই ভেন্টিলেটর ওজনেও হালকা, পোর্টেবল। খুব বড় আইসোলেশন ওয়ার্ড হোক বা সিঙ্গল কেবিন, যে কোনও জায়গায় ইনস্টল করা যাবে এমন ভেন্টিলেটর। খরচও পড়বে সাধ্যের মধ্যেই”।
করোনাভাইরাস ফুসফুসের কোষগুলিকে সংক্রামিত করলে শ্বাসের পথটাই বন্ধ হয়ে যায়। অ্যাকিউট রেসপিরেটারি ডিসট্রেস সিন্ড্রোম দেখা যায় যেখানে ফুসফুস ক্রমশই স্টিফ হতে শুরু করে, তার কার্যকারিতা কমতে থাকে। ফলে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় রোগীর। এই অবস্থায় রোগীর শরীরে দ্রুত অক্সিজেন পৌঁছে দেবে এই ভেন্টিলেটর ‘ওপেন-এয়ারভেন্টজিটি’।
দেবেশের জন্ম পাটনায়। ত্রিচির রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়ার পরে আমেরিকায় পাড়ি দেন। ইউনিভির্সিটি অব উইসকনসিন-ম্যাডিসন থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি। পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চের পাশাপাশিই জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করেন দেবেশ। তাঁর স্ত্রী কুমুদা রাঁচির বাসিন্দা। ছ’বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন নিউ জার্সিতে। সেখানেই মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনা। দেবেশ ও কুমুদা দু’জনেই বলেছেন এই ভেন্টিলেটর বাণিজ্যিক হারে তৈরি করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছে দেওয়া হবে ভারতে। এরপরে আফ্রিকার দেশগুলিতে পাঠানো হবে এই ভেন্টিলেটর।
প্রসঙ্গত, তাঁদের তৈরি প্রোটোটাইপ থেকেই সিঙ্গাপুরের টেকনিক্যাল ফার্ম রিনিউ গ্রুপ তৈরি করছে এই ভেন্টিলেটর। এই প্রজেক্টের নেতৃত্বে রয়েছেন আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইঞ্জিনিয়ার রবি সাজওয়ান।