সামান্য পুঁজিতে অল্প জায়গায় ঘরে বসেই রোজগার করা যাবে মাসে পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি। করোনা ও লকডাউনে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এমনই অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই প্রকল্প রূপায়ণ করবে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘একশো দিনের কাজে কনভারজেন্সের মাধ্যমে অনেক কিছু করা যায়। মাছ চাষ থেকে আনাজ চাষ, সবটাই সম্ভব। এতে মজুরির পয়সা দিতে হয় না। এই ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে কী কী উপায়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়, সেই ব্যাপারে আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’
গ্রামোন্নয়নের কাজে গতি আনতে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে ‘কমপ্রিহেন্সিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ নামে একটি সংস্থা তৈরি হয়েছে। সেটিকে দেওয়া হয়েছে এই কাজের ভার। সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা পঞ্চায়েত দপ্তরের যুগ্ম সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরা চাষআবাদের কাজে খুব একটা অভ্যস্ত নন। তবে তাঁদের সবার চাষের জমি না-থাকলেও গ্রামে একটা পাকা বাড়ি রয়েছে অধিকাংশের। তাঁদের জন্য যে সব কাজের কথা ভাবা হয়েছে, সে সব বাড়িতেই করা সম্ভব।’
তিনি জানান, বাড়ির দেওয়ালে ভার্টিকাল কিচেন গার্ডেন বানানো যেতে পারে। সেখানে উচ্ছে, করলা, শসা, চিচিঙ্গে গাছ লাগানো যেতে পারে। ছাদের উপর ভারা বেঁধে হ্যাংগিং সিড বেড বানিয়ে চারা বসানো যায়। প্লাস্টিক পাইপে গোবর-মাটি ভরে হাইড্রোপনিক বানিয়ে তাতে টোম্যাটো-সহ বিভিন্ন ধরনের আনাজ চাষ করা যাবে। বাড়ির উঠোনে অথবা ছাদে সিমেন্ট বা প্লাস্টিকের চৌবাচ্চায় কই, মাগুর, শিঙির মতো জিয়ল মাছ চাষ করে মাসে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করা যেতে পারে। যাঁদের বাড়িতে জায়গা একটু বেশি, তাঁদের হাঁস-মুরগি প্রতিপালনের কাজেও নিযুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। কৃষি সমবায় থেকে তাঁরা যাতে ঋণ পান, তার ব্যবস্থাও করা হবে।