গত সপ্তাহেই ঘরোয়া বিমান চলাচল শুরুর ঘোষণা করার সময়ে মাঝের আসন ফাঁকা রাখার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বলেছিলেন, সেটা করতে গেলে বিমান ভাড়া অনেকটাই বেড়ে যাবে। যার ফলে আজ দীর্ঘ বিরতির পরে সোমবার থেকে দেশের বহু অংশে ঘরোয়া বিমান চলাচল চালু হলে বিমানে মাঝের আসনেও যাত্রী নিতে পারছে বিমানসংস্থাগুলি। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত সরাসরি উড়িয়ে দিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, মাঝের আসন ফাঁকা রাখতেই হবে।
আগামী ৬ জুন থেকে এই নিয়ম বলবৎ হবে বলে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করার বিষয়টা সাধারণ জ্ঞান। এয়ার ইন্ডিয়াকে আদলাত জানায়, আগামী ১০ দিন মাঝের আসনে যাত্রী নিতে পারবে কিন্তু তার পরে আর নয়। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, ‘এটা একেবারাই সাধারণ বুদ্ধি যে এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিচারপতি জানতে চান, বাইরে কমপক্ষে ছ’ফুট দূরত্ব রাখতে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিমানের ভিতরে কী হবে? এর জবাবে সরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, পরীক্ষা করা ও কোয়ারেন্টাইনে রাখাটাই সঠিক পদ্ধতি। বসার জায়গায় দূরত্ব নয়। তিনি দাবি করেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই কথা শুনে বিচারপতি জানতে চান, ‘এর ফলে যাত্রীরা সংক্রমিত হবেন না সেটা কী করে বলছেন? ভাইরাস কি এটা মনে করবে যে এটা বিমানের ভিতর তাই সংক্রমণ করা ঠিক হবে না? পাশাপাশি যাত্রীদের বসালে সংক্রমণ হবেই।’ এরপরেই সরকারের পক্ষে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ১৬ জুন পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তা শুনে আদালত জানায়, ৬ জুনের পরে আর মাঝের আসনে যাত্রী নেওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট দেবেন যোগেশ কানানির অভিযোগ, অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রকের পক্ষে গত ২৩ মার্চ যে সার্কুলার দেওয়া হয় তাতে বিমানের মাঝের আসন ফাঁকা রাখতে বলা হলেও এয়ার ইন্ডিয়া ‘বন্দে ভারত মিশনে’-এর বিমানগুলিতে সেই নিয়ম মানেনি। মুম্বই হাইকোর্টে করা সেই মামলায় আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে মাঝের আসন ফাঁকা রাখতে বলে কেন্দ্রকে। এর পরে মামলা সুপ্রিম কোর্টে আসে। মামলার গুরুত্ব বুঝে এদিন ইদের ছুটির মধ্যেও হয় শুনানি।