দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে প্রথম উপায় বাতলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা-লকডাউনে রাজ্য সরকারগুলির রাজস্ব সংগ্রহ প্রক্রিয়া একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ার মোকাবিলায় এফআরবিএম-এর ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে রাজ্যগুলিকে বেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কেন্দ্র মমতার সুপারিশ মানলেও তাতে এমন চারটি কৌশলগত শর্ত চাপাল কেন্দ্র, যে তার সুফল পাবে না বাংলার সরকারই।
করোনা-লকডাউনে বিভিন্ন রাজ্যের বিপুল আর্থিক ক্ষতির মোকাবিলায় রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা বাড়াল কেন্দ্র। রবিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, চলতি অর্থ বছরে শর্তসাপেক্ষে রাজ্যগুলি তাদের জিএসডিপি-র সর্বোচ্চ ৩ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাজার থেকে ঋণ নিতে পারবে। এর মধ্যে ৩ থেকে বাড়তি ০.৫ শতাংশ ঋণ নেওয়ার জন্য তাদের কোনও শর্ত মানতে হবে না।
তবে তার পরবর্তী ১ শতাংশ বাড়তি ঋণ নিতে হলে তাদের চারটি শর্ত – এক দেশ এক রেশন কার্ড চালু করা, শিল্প ও ব্যবসা করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, বিদ্যুৎ বণ্টন ক্ষেত্রে সংস্কারসাধন এবং পুরসভাগুলিকে বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে হবে। প্রত্যেকটি শর্ত পৃথক ভাবে মানলে চারটি পর্যায়ে প্রতিটিতে ০.২৫ শতাংশ রাজ্যগুলি বাড়তি ঋণ নিতে পারবে। এই চারটি সংস্কারের কমপক্ষে তিনটি বাস্তবে কার্যকর করলে তবেই রাজ্যগুলি আরও তাদের জিএসডিপি-র ০.৫ শতাংশ ঋণ নিতে পারবে।
কেন্দ্রের এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘এটা রাজ্যের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। কেন্দ্র এফআরবিএম-এর ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে রাজ্যগুলিকে বেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি মেনেছে। কিন্তু, তাতে যে সমস্ত কড়া শর্তাবলি চাপিয়েছে, তা রাজ্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।’
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত কয়েক মাস ধরে কেন্দ্রের কাছে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যের প্রাপ্যের যে দাবি করছিলেন, তা-ও মেনে নিয়েছেন সীতারামন। তিনি জানিয়েছেন, গত ডিসেম্বর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত কোনও রাজ্যকেই জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেয়নি কেন্দ্র।