বুধবারের ঘোষণায় টিডিএস ও টিসিএস কমিয়ে মধ্যবিত্তের হাতে বাড়তি নগদ জোগানের ব্যবস্থা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কিন্তু এভাবে আপাতত কিছু বাড়তি টাকা হাতে এলেও আর্থিক বছরের শেষে সেই টাকাটা কর বাবদ জমা করতেই হবে। কাজেই পুরো বছরের নিরিখে আদৌ বাড়ছে না আয়। বরং এখন কর কম কাটায় বছরের শেষে বেশি টাকা জমা করতে হবে। অতএব প্রশ্ন উঠছে, এই কথাটা অর্থমন্ত্রীর এত ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারের কী ছিল?
সরকার জানিয়েছে, সুদ, ডিভিডেন্ড ও ভাড়ার ক্ষেত্রে ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স বা টিডিএসের হার ২৫ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। কিছু ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে ট্যাক্স কালেকশন অ্যাট সোর্স বা টিসিএস-ও। নির্মলার দাবি, এর ফলে যাঁদের ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে কিংবা যাঁরা মিউচুয়াল ফান্ড ও শেয়ারে বিনিয়োগকারী, তাঁদের হাতে বাড়তি নগদ টাকা আসবে। বিমার পলিসি, বাড়ি ভাড়া, চুক্তির জেরে উপার্জন, প্রফেশনাল ফি, কমিশন, ব্রোকারেজ ইত্যাদির ক্ষেত্রেও টিসিএসের হার কমবে। গাড়ি কেনার সময়ও ১ শতাংশের বদলে .৭৫ শতাংশ টাকা কাটা কর বাবদ কাটা হবে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট সব মানুষের হাতেও বাড়তি নগদ টাকা আসবে।
সব মিলিয়ে এই বাড়তি টাকার অঙ্ক ৫০ হাজার কোটিতে দাঁড়াবে বলে অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন। কিন্তু ঘটনা হল, টিডিএস বা টিসিএসের হার কমা মানে করের হার কমে যাওয়া নয়। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তির ফিক্সড ডিপোজিটের মাসে ১০ হাজার টাকা সুদে টিডিএস কাটা হত ১০ শতাংশ। অর্থাৎ টিডিএস বাবদ গ্রাহককে দিতে হয় ১ হাজার টাকা। নতুন হার অনুযায়ী টিডিএস হবে ৭.৫ শতাংশ। তা হলে গ্রাহককে এখন টিডিএস দিতে হবে ৭৫০ টাকা। মাসে ২৫০ টাকা তাঁর হাতে বাড়তি আসবে। কিন্তু বছরের শেষে বাড়তি আসা পুরো টাকাটাই ফের করবাবদ জমা করতে হবে। ফলে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় এক্ষেত্রে আদৌ কোনও কাজের কাজ যে হয়নি, সে কথা বলাই বাহুল্য।