করোনা যুদ্ধে সামনের সাড়িতে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের সমস্ত রকমের সহযোগিতার কথা বলছে সরকার। কিন্তু মানুষ তা শুনছে কই! আর এই অসচেতনতার ফলেই প্রাণ গেল এক স্বাস্থ্যকর্মীর। করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরির জন্য চরম লাঞ্ছনার শিকার হয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী স্বাস্থ্যকর্মী।
সহকর্মী তথা আধিকারিকদের থেকে সামান্য সহযোগিতা না পেয়ে অপমানে, অভিমানে আত্মঘাতী হলেন এক স্বাস্থ্যকর্মী । মৃত্যুর আগে লিখে রাখা তিন পাতার বয়ানে করোনা মোকাবিলার কাজ করতে গিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা লিখে গিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ঘুঘু ডাঙ্গা সাবসেন্টারের সুপারভাইজার পদে কর্তব্যরত দেবাশিস চক্রবর্তী (৫৯) ।
সুইসাইড নোটে ওই স্বাস্থ্যকর্মী লেখেন, সরকারি নির্দেশে গ্রামে লালারস সংগ্রহের জন্য জায়গা চিহ্নিত করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে । ঘটনার পেছনে এক চিকিৎসক এবং কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মীর ইন্ধন ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মৃতের ভাই জয়ন্তকুমার চক্রবর্তী জানান, সরকারি নির্দেশ মেনে ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামে লালারস সংগ্রহ কেন্দ্রের জন্য যায়গা চিহ্নিত করছিলেন দাদা । তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী । হেনস্থার শিকার হতে হয়।সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা তো পাননি, উল্টে তাঁদের ইন্ধনে গোটা ঘটনা ঘটেছে জানতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ।
দফতরে এবং এলাকায় দায়িত্ববান কর্মী হিসেবে জেলার স্বাস্থ্য কর্মী মহলে পরিচিত ছিলেন তিনি । অগস্ট মাসে অবসর নিতেন তিনি। তার আগেই অপ্রত্যাশিত এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ স্বাস্থ্যকর্মীরা। এমনকি ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী মহলে । এই মর্মে বৃহস্পতিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্র নাথ প্রামানিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে করোনা মোকাবিলার কাজে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীরা । অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা ।