করোনার থাবায় থরহরিকম্প গোটা দেশ। ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে জারি একটানা লকডাউন। এ হেন পরিস্থিতিতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধান যোদ্ধা ডাক্তাররাই। তাই করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় সকলে যখন ঘরে দরজা বন্ধ করে বসেছিলেন, তখন তাঁকে বেরতে হয়েছিল বাইরে। মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়তে গিয়ে বহু রোগীর সংস্পর্শেও এসেছিলেন তিনি। আর তার ফলে খুব সহজেই তাঁর শরীরেও থাবা বসিয়েছিল করোনা। বাধ্য হয়ে ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। চিকিৎসার পর গাইডলাইন মেনে দু’বার কোভিড-১৯ টেস্ট হয়েছে তাঁর। দু’টি রিপোর্টই নেগেটিভ। তাই এখন সুস্থ তিনি। কিন্তু দক্ষিণ দিল্লীর বসন্তকুঞ্জে নিজের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে চূড়ান্ত হেনস্তার শিকার হলেন ওই মহিলা চিকিৎসক।
মহিলা চিকিৎসক জানান, বসন্তকুঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় এক হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকতে হয়েছিল তাঁকে। গত ১৩ মে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ওই মহিলা চিকিৎসক। অভিযোগ, ঘরে ঢোকামাত্রই এক প্রতিবেশী তাঁর কাছে আসেন। করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে তাঁকে কিছুতেই এই ঘরে থাকতে দেওয়া যাবে না বলেই দাবি করেন ওই প্রতিবেশী। তাঁকে বারবার তিনি এ কথা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তাঁর দুটি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু ওই রিপোর্টে বিশ্বাস করতে চাননি প্রতিবেশী। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র চিকিৎসক বলে পরিচিতির সুবাদেই তিনি ভুয়ো রিপোর্ট দেখাচ্ছেন।
এরপর ওই চিকিৎসককে ঘরের ভিতরে প্রতিবেশীরা তালাবন্দী করে দেন বলে অভিযোগ। ওই প্রতিবেশী সেই সময় হুমকির সুরে তাঁকে বলেন, ‘আমি দেখছি কীভাবে আপনি বাইরে বেরোন। এখন আপনাকে এখানেই থাকতে হবে। যাকে খুশি ফোন করে অভিযোগ জানান।’ মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে পুলিশে ফোন করেন ওই মহিলা চিকিৎসক। তাঁর হাসপাতালের এক চিকিৎসককেও গোটা বিষয়টি জানান তিনি। তারপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই মহিলা চিকিৎসককে উদ্ধার করে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটছে মহিলা চিকিৎসকের। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা।