দুর্বল চিত্তের মানুষ হলে এই গান এড়িয়ে যান। রাতে ঘুম না ও আসতে পারে, খিদে চলে যেতে পারে খুব আবেগপ্রবণ হলে।আমি সাধারণত এভাবে লেখা শুরু করিনা। আজ করছি। অনুরোধ করছি সব কিছু বাদ দিয়ে দুমিনিট এই দিনমজুরের গান শুনতে।
অনেক তো প্রথিতযশা শিল্পীর গান শুনলেন লকডাউনে, এবার এই গানটা শুনুন। হয়তো এভাবেই আন্দোলনের Anthem উঠে আসে। হয়তো এভাবেই দেহাতি সুর হাত পা ঠান্ডা করে দেয়, রাষ্ট্রের কালঘাম ছুটিয়ে দেয়।
আমি চোখের জল সামলাতে পারিনি। গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসছে লাইনগুলো শুনে। খুব রাগ হচ্ছে, খুব অসহায় লাগছে। ভয় ও হচ্ছে, একদিন এরা গান থামিয়ে দিয়ে যদি কোদাল, কাস্তে, হাতুড়িটা আরো শক্ত করে ধরে তেড়ে আসে আমার দিকে। আমরা কিচ্ছু না করে মজা দেখছি।
এই মজদুরের খোঁজ পাইনি এখনো। নামহীন, ঠিকানাহীন এক মানুষ হয়তো আরো হাজার হাজার মানুষের মতো হেঁটে চলেছে ঘরে ফিরবে বলে। সাধাসিধা মাটির মানুষ। এই অসামান্য গানটি গাওয়ার সময় মুখোশ খোলেননি। হয়তো রাজকোপে পরার ভয় রয়েছে তাই। হয়তো টাকা আটকে পরার ভয় বা ট্রেনে উঠতে না দেওয়ার ভয়।
আমার ও ভয় করছে। এই গানওলার পরিচয় যদি না জেনে উঠতে পারি? যদি এই গানটা গাওয়ার পরে ও অসুস্থ হয়ে যায় এতো দিন হাঁটতে হাঁটতে? যদি ও ক্লান্ত হয়ে ট্রেন লাইনে শুয়ে পরে? যদি ও সাইকেলে রাতের পর রাত যেতে যেতে ট্রাকের ধাক্কায় রাস্তার ধারে ছিটকে পরে?
আমাদের তো ওর হাত ধরে অনুরোধ করতে হবে, “ও গানওলা আরেকটা গান” গাইতে বলতে হবে। আমাদের তো সত্যি কোথাও যাওয়ার নেই, কিচ্ছু করার নেই। স্রেফ মনে রাখতে হবে। সব মনে রাখতে হবে যা যা এই কয়েকদিনে দেখলাম।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত