এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে পুরোপুরি কোভিড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে উঠে পড়ে লাগল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, এর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসা কীভাবে হবে তার জন্য সুচিন্তিত ও গঠনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই মেডিক্যাল কলেজ। করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা কোথায় হবে, সঙ্কটাপন্ন রোগীদের কোথায় রাখা হবে সবদিক বিবেচনা করে একটা ম্যাপ বানিয়ে ফেলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
করোনা চিকিৎসার জন্য দেশের মধ্যে প্রথম কোনও সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সমস্ত আউটডোর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি বিভাগ ছাড়া হাসপাতালে এখন করোনা রোগীদেরই চিকিৎসা হবে বলে জানা গিয়েছে। তারজন্য ৫০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোনও রোগী হাসপাতালে এলে তিনি কোভিড পজিটিভ কিনা সেটা আগে যাচাই করা হবে, তারপর কীভাবে এবং হাসপাতালের কোন ওয়ার্ডে তাঁকে ভর্তি করা হবে, অবস্থা গুরুতর হলেই বা কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার পরিকল্পনা করে ব্লু প্রিন্ট বানানো হয়েছে।
জানা গেছে, এই ব্লু-প্রিন্টকে তিনটি পর্যায়ে ঠিক করা হয়েছে। রোগীদের ভাগ করে নেওয়া হবে তিনভাগে। প্রথমত, কোভিড সংক্রমণের পরীক্ষা হয়নি যাঁদের বা সংক্রমণের সন্দেহে আসা রোগীরা। দ্বিতীয়ত, যাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ ও সঙ্কটাপন্ন রোগী। এবং তৃতীয়ত, কোভিড সংক্রমণ নেই অথবা ‘সারি’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম) ধরা পড়েনি এমন রোগী। এদিকে জানা গেছে, কোভিড রোগী নন, কিন্তু অন্যান্য শারীরিক সমস্যা আছে এমন রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হবে।
এবার আসা যাক কোভিড পজিটিভ রোগীদের কথায়। সূত্রের খবর, সংক্রামিত রোগী বা হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর পরে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে এমন রোগীদের আগেই সুপার স্পেশালিটি ব্লকে ভর্তি করানো হবে। যদি তাঁদের অস্ত্রোপচারের দরকার পড়ে তাহলে অন্য ব্যবস্থা আছে। আর যদি তা না হয় তাহলে এসএসবি-তে ওষুধ বা থেরাপির মাধ্যমেই সংক্রমণ সারানোর চেষ্টা হবে। রোগীর অবস্থা যদি গুরুতর হয় তাহলে এসএসবি-সিসিইউতে ভর্তি করানো হবে। আর সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে গেলে কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে ছেড়ে দেওয়া হবে।
করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা হয়নি যাঁদের অথবা সন্দেহ রয়েছে সংক্রামিত এমন রোগীকে প্রথমে টেস্ট করানো হবে। তার জন্য তাঁকে পাঠানো হবে গ্রিন ফার্স্ট ফ্লোরে। সেখানে নাক বা গলা থেকে নমুনা, রক্ত বা ডিম্বানু-শুক্রাণু নিয়ে সংক্রমণের পরীক্ষা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে গ্রিন থার্ড বা ফোর্থ ফ্লোরে (চারতলা বা পাঁচতলায়)পর্যবেক্ষণে পাঠানো হবে। যদি দেখা যায় পরবর্তীকালে রোগীর মধ্যে উপসর্গ দেখা গেছে বা অবস্থা গুরুতর তাহলে তাঁকে গ্রিন সেকেন্ড ফ্লোরে সিসিইউ তে ভর্তি করা হবে। তারজন্য সিসিইউ আগে থেকেই স্যানিটাইজ বা জীবাণুমুক্ত করা থাকবে। আর রোগী যদি পুরোপুরি সুস্থ হন তাহলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।