কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত করোনা মোকাবিলার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। তাই ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে গত ২৫ মার্চ থেকে গোটা দেশজুড়ে চলছে একটানা লকডাউন। তবে এই লকডাউনের জেরেই রুজি-রোজগার বন্ধ হওয়ার মুখে এক শ্রেণির মানুষের। আগামী দিনে এই পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে এবার আশঙ্কা প্রকাশ করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, এই দুঃসময়ে দরিদ্র মানুষের হাতে নগদ তুলে দিতে না পারলে, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পগুলির পাশে না দাঁড়ালে আগামী দিনে দেশে বেকারত্ব সুনামির আকার ধারণ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশের অর্থনীতিতে লকডাউন কী প্রভাব ফেলতে পারে, তার সুরাহাই বা কী হতে পারে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, রঘুরাম রাজনের মতো বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে দেখা গিয়েছে রাহুল গান্ধীকে। শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন তিনি। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন রাহুল। তাঁর মতে, ১৭ মে লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সেখান থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসা যায়, তা স্পষ্ট করতে হবে সরকারকে। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইটা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে পরাজয় নিশ্চিত। বাকিদেরও ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন।’
দেশের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রীকে সকলকে নিয়ে চলার কথা ভাবতে হবে বলেও মন্তব্য করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘এই সঙ্কটের সময় শুধুমাত্র একজন দৃঢ়চেতা প্রধানমন্ত্রী থাকলেই হবে না, দৃঢ়চেতা রাজনীতিক, মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলাশাসকও প্রয়োজন। রাজ্য, জেলা এবং পঞ্চায়েত স্তরেও দৃঢ়চেতা ও দেশপ্রেমী নেতার প্রয়োজন, যাতে একেবারে গোড়া থেকে সমস্যা নির্মূল করা যায়।’ অন্যদিকে, লকডাউনের জেরে যাঁদের রোজগারপাতি বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে, তাঁদের পাশে না দাঁড়ালে এই সঙ্কট থেকে বেরনো সম্ভব হবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। লকডাউনে অনেকের মধ্যে মানসিক পরিবর্তন এসেছে, সুইচ অন বা অফ করে যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে করোনা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন মানুষ। তাঁদের সাহস জোগাতে হবে।’ করোনা পরবর্তী কর্মসঙ্কট রুখতে পরিযায়ী শ্রমিক, দরিদ্র মানুষ এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিকে অর্থনৈতিক সহায়তা জোগানো প্রয়োজন বলেও জানান রাহুল। তিনি বলেন, ‘এখনই সাহায্য প্রয়োজন পরিযায়ী শ্রমিকদের। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিরও তাই অবস্থা। এ নিয়ে গড়িমসি করলে দেশে বেকারত্ব সুনামির আকার ধারণ করবে।’