লকডাউনের ধাক্কা সামলে কবে ফের খেলা শুরু হবে? এই প্রশ্নে আকুল বিশ্বের সব ক্রীড়াপ্রেমীই। ক্রীড়াসরঞ্জামের জন্য বিখ্যাত, কলকাতার ময়দান মার্কেটে লকডাউনের জন্য আরও বেশি হাহাকার। খেলা দেখার জন্য নয়, সংসার চালানোর জন্য। পেটে টান পড়ার জন্য।
ধর্মতলার বাস টার্মিনাসের গায়ে বিধানচন্দ্র রায়ের নামে মার্কেটই পরিচিত ময়দান মার্কেট হিসেবে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুশো স্থায়ী ক্রীড়াসরঞ্জাম বিক্রির দোকান। এ ছাড়াও মার্কেটের আশেপাশে ছড়িয়ে আরও শ’খানেক ক্রীড়াসরঞ্জাম বিক্রির হকার। প্রতি দোকানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্তত চারটি পরিবারের রোজগার জড়িয়ে।
একই ছাদের তলায় লুডোর বোর্ড থেকে পাহাড়ে চড়ার সরঞ্জাম। জিমন্যাসিয়ামের জিনিস থেকে জুভেন্তাস-বার্সেলোনা-ম্যাঞ্চেস্টারের জার্সি। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, সাঁতার, ভলিবল, বক্সিংয়ের সরঞ্জাম। মেডেল, ট্রফি সব পাওয়া যায় এই বাজারে। অত্যন্ত অল্প দামে। সম্ভবত এই মার্কেটই ভারতের সবথেকে বড় ক্রীড়াসরঞ্জাম মার্কেট। এখান থেকে সারা রাজ্যের সঙ্গে খেলার জিনিস অন্য রাজ্যেও যায়। ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওডিশা, আসাম, তামিলনাড়ু, মণিপুর, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের অর্ডার সারা বছরই পান এখানকার বিক্রেতারা। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে যা পুরোপুরি বন্ধ।
মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে সরঞ্জাম পাঠায় ‘অভিষেক স্পোর্টস’। তার মালিক পল্লব পাল বললেন, ‘হঠাৎ লকডাউন হওয়ায় বড় ক্লাব সহ সর্বত্র পেমেন্ট আটকে রয়েছে। দোকান বন্ধ থাকায় খুচরো ব্যবসাও বন্ধ। আগামী তিন চার মাসে খেলাধুলো চালু হবে বলেও মনে হয় না। ফলে আমাদের অবস্থা শোচনীয়।’ ময়দান মার্কেটে বিদেশি ক্লাবের জার্সি আর খেলার নানা বিদেশি জুতো কেনার ভিড় জমে জ্যাকিদার দোকানে। ‘জ্যাকি স্পোর্টসের’ কর্তা সঞ্জুর কথায়, ‘দোকান খুললেও খেলার জিনিস কেনার মতো মানুষের কতটা ক্ষমতা থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাই আমাদের ব্যবসা বড় অনিশ্চয়তায়।’