আগামী ১৭ মে অবধি গোটা দেশে জারি থাকবে লকডাউন। তবে বাংলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় লকডাউন চললেও তাতে আরও কিছু ছাড় মিলবে বলে জানা গিয়েছে। আজ বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তিনি জানিয়েছেন, কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া সর্বত্রই এইসব ছাড় মিলবে। তবে সব ক্ষেত্রেই মেনে চলতে হবে বেশ কিছু শর্ত।
এদিন মুখ্যসচিব বলেন, ‘তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে ৪ মে থেকে। এই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কিছু ছাড় দেওয়া যেতে পারে বলে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। সেগুলি বিবেচনা করার পর রাজ্য সরকারও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশের লকডাউনের যে নীতি তা ভাঙা হলেও কেন্দ্রের নির্দেশ ও সাধারণের সমস্যার কথা ভেবেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তবে এই ছাড়ের সময়েও সরকারের তরফে যে বিধিনিষেধের কথা বলা হচ্ছে সেগুলি ঠিক ভাবে পালন না হলে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজীব সিনহা।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, ‘জেলার মধ্যে বাস চলাচল করতে পারবে। তবে কোনও বাসেই একসঙ্গে ২০ জনের বেশি যাত্রী থাকতে পারবেন না। জেলার বাইরেও যাওয়া যাবে না। যে সব বাসের রুটে একাধিক জেলা রয়েছে তাদের স্থানীয় আরটিও-র কাছে আবেদন করে রুট বদলে নিতে হবে। জেলার মধ্যে যেহেতু সরকারি বাস চলে না সেহেতু বেসরকারি বাস মালিকদের এজন্য সরকারের পক্ষে অনুরোধও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।’
অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর দোকান খোলার জন্য আগে যা নিয়ম ছিল তাই বজায় থাকছে তবে এখন অত্যাবশকীয় নয়, এমন দোকানও খোলা যাবে। মুখ্যসচিব এদিন জানিয়েছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মতো চায়ের দোকানও খোলা যাবে, কিন্তু সেখানে বসে চা খাওয়া যাবে না। চা কিনে বাড়ি নিয়ে গিয়ে খেতে হবে। মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব রাখার সমস্ত নিয়মবিধি।
এদিন বেসরকারি অফিস খোলার ক্ষেত্রেও নতুন ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে তাতেও থাকছে বিধিনিষেধ। সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত অফিস খোলা রাখা যাবে। তবে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে হবে। অফিসে যাওয়ার জন্য কেউ গাড়ি ব্যবহার করলেও নিয়ম মানতে হবে। একটি গাড়িতে চালক ছাড়া দু’জন যাত্রী থাকতে পারবেন। তবে সরকার চায়, যতটা সম্ভব ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু রাখুক বেসরকারি সংস্থাগুলি।
এছাড়াও, নির্মাণ কাজ শুরুর ব্যাপারেও এদিন নতুন কিছু নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় তৃতীয় দফার লকডাউনের সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। তবে তার জন্য জেলাশাসকের অনুমতি নিতে হবে। শহরাঞ্চল ও কলকাতার ক্ষেত্রেও নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে যেখানে নির্মাণ হচ্ছে সেখানেই শ্রমিকরা থাকবেন। একইসঙ্গে কলকাতার ক্ষেত্রে পুর কমিশনারের অনুমতি নিয়ে তবে নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।