গত মাসেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা যায় আরোগ্য সেতু অ্যাপের কথা। সমস্ত দেশবাসীকে অ্যাপটি ডাউনলোড করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। আর তৃতীয় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই সরকারি ও বেসরকারি কর্মীদের জন্য এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় আরোগ্য সেতু নামে মোবাইল অ্যাপটি আমজনতার ‘দেহরক্ষী’ নাকি ‘গুপ্তচর’? এবার এই বিতর্কেই সরগরম দিল্লীর রাজনীতি। দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আবহে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিরোধী পক্ষের বিতণ্ডার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই অ্যাপ।
এক দিকে কেন্দ্রীয় সরকার ‘আরোগ্য সেতু’–কে সাধারণ মানুষের দেহরক্ষী হিসেবে তুলে ধরে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সরকারের বক্তব্য, এই অ্যাপের সাহায্যে করোনা সংক্রমণের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। রোগীর মোবাইলের তথ্যের ওপর নয়। মোবাইলে ব্লুটুথ ও জিপিএস চালু থাকায় কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির কাছাকাছি এলেই তা জানান দিচ্ছে এই অ্যাপটি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি দফতরের সমস্ত কর্মীকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে সচল রাখতে হবে।
শুধু তাই নয়, ওই নির্দেশিকায় এ-ও বলা হয়েছে, যদি কোনও কর্মীর মোবাইলে ওই অ্যাপ না থাকে, তা হলে তার দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাকে। যেখানে সরকারি ও বেসরকারি দফতর খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই অ্যাপের মাধ্যমে আমজনতার গোপনীয় তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ করছেন বিরোধীরা। যেমন টুইটারে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ‘এই অ্যাপের বরাত দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে। এতে কোনও সরকারি নজরদারি নেই। ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে সাধারণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’