করোনা মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে সমালোচনা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। শনিবার সকালেও করোনা আক্রান্তের তালিকায় কেন্দ্র ও রাজ্যের পরিসংখ্যানে পার্থক্য কেন, প্রশ্ন তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করে ট্যুইট করেন রাজ্যপাল৷ এ বার রাজ্যপালকে একটি কড়া চিঠি লিখে জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এ বার ১৩ পাতার চিঠিতে সংবিধানের প্রতিটি অনুচ্ছেদ ও অধ্যায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘দেশের সংবিধান রচনা হওয়ার পর কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাষায় আক্রমণ করেননি। সেদিক থেকে এই ঘটনা নজিরবিহীন। ফলে সেই কাজ খুব একটা অভিপ্রেত নয় বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে রাজ্যপালের চিঠিতে ব্যবহার করা একাধিক শব্দের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যপালের এইসব শব্দের ব্যবহার মোটেই সম্মানজনক নয়।’ মমতা আরও লিখেছেন, ‘মন্ত্রী, আধিকারিকদের অপমান করা হয়েছে৷ ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটা বিরল৷ এই ধরনের ভাষা কাম্য নয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ ভাবে কথা বলা যায় না৷’
মমতা লিখেছেন, ‘সরকারের ভুল রাজ্যপালের বিচার্য নয়৷ সরকার ভুল করলে বিচারব্যবস্থা দেখবে৷ সরকার শুধু সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ৷ মনোনীত কারও কাছে জবাবদিহির দায় নেই৷ জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেন৷ আপনি সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন৷ সরকারের সিদ্ধান্ত পছন্দ না হতে পারে, মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিলে মানতেই হবে৷ সংবিধান অনুযায়ী আপনি একবার মাত্র ফেরত পাঠাতে পারেন৷’
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যে কি রাজ্যপাল সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন, যদি তা হয় সেটা মোটেই কাম্য নয়। মুখ্যমন্ত্রী চিঠির শেষে জানিয়েছেন, এরপর রাজ্যপালের কোনও চিঠির জবাব তিনি আর দেবেন না, কারণ এখন রাজ্যপ্রশাসন করোনা প্রতিরোধেই ব্যস্ত। তাই এইদিকে মাথা দেওয়া মোটেই কাম্য হবে না।