সংসারের সকলে মুখে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে চেয়েছিলেন। তাই শারীরিক সমস্যার কথা না ভেবে যক্ষ্মা রোগী বছর আঠাশের যুবক বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মিত্তাপাল্লে গ্রামের বাসিন্দা হরিপ্রসাদ। সরকার ফেরানোর ব্যবস্থা করছে ঠিকই। কিন্তু ধৈর্য ধরে রাখতে পারেননি তিনি। তাই হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৫০ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিক পরিণতি। প্রাণ গেল পরিযায়ী শ্রমিকের। করোনা সংক্রমণের সন্দেহে দেহ ছুঁয়ে দেখলেন না তাঁর পরিজনেরা।
হরিপ্রসাদ নামে ওই যুবক বেশ কয়েকদিন আগেই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে
গিয়েছিলেন। লকডাউনে আটকে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় হেঁটেই বাড়ি ফিরবেন বলে স্থির করেন। হাঁটার সময় রাস্তায় মেলেনি খাবার, জল। একে যক্ষ্মা রোগী তার উপর আবার জোটেনি খাবার। তাই তাঁর শরীর ক্রমশই খারাপ হচ্ছিল। বাড়ির প্রায় কাছেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রাণও হারান তিনি। খবর পান তাঁর পরিজনেরা। তবে কেউই তাঁদের কাছে এগিয়ে আসেননি। ভিনরাজ্য থেকে ফিরছিলেন যুবক, তাই করোনাতে মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করে পরিজন এবং তাঁর পরিচিতরা। তাই রাস্তাতেই দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকে দেহ।
খবর দেওয়া হয় পুলিশ। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তেও পাঠানো হয়েছে। পরিজনদের সঙ্গে কথা বলার পর পুলিশের দাবি, যক্ষ্মা রোগের জেরে এমনি শরীর অসুস্থ ছিল যুবকের। তার উপর আবার হেঁটে আসার ফলে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ক্লান্তি শরীর সহ্য করতে পারেনি। তার ফলেই প্রাণ হারিয়েছেন যুবক। তবে তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে করোনার কোনও যোগ নেই।