ওয়ান ডে ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। টেস্টে র্যাঙ্কিংয়ে রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তাঁর ব্যাটিং নৈপুণ্যে মুগ্ধ ক্রিকেট দুনিয়া। কেউ কেউ বলছেন, একদিন তিনি ভেঙে দেবেন কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকরের শততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। নিজের এই উত্থানের পিছনে তিনজন কোচের অবদানের কথা মুক্ত কণ্ঠে স্বীকার করেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তাঁরা হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন তারকা ব্যাটসম্যান গ্যারি কার্স্টেন, ভারতের প্রাক্তন কোচ ডানকান ফ্লেচার, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন উইকেটরক্ষক তথা বর্তমান কোচ মার্ক বাউচার।
শর্ট বল খেলতে কেরিয়ারের শুরুতে সমস্যা হতো বিরাট কোহলির। মাঝে মধ্যে তিনি বিপক্ষ দলের বোলারদের ফাঁদে পা দিতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন উইকেটরক্ষক তথা বর্তমান কোচ মার্ক বাউচার শর্ট বলে কিভাবে মোকাবিলা করতে হয়, তা শিখিয়েছিলেন বিরাটকে। এই প্রসঙ্গে ভারত অধিনায়ক বলেছেন, ‘২০০৮ সালে মার্ক বাউচার আমাকে হাতে ধরিয়ে শর্ট বল খেলা শিখিয়েছিলেন। উনি বলেছিলেন, তোমার মধ্যে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। চার বছর পর আমি যখন ভারতে কমেন্ট্রি করতে আসব, তখন যদি দেশের হয়ে জার্সি গায়ে তোমাকে খেলতে না দেখি তাহলে খুব হতাশ হবো। তার জন্য শর্ট বলের সমস্যা তোমাকে দ্রুত কাটিয়ে উঠতে হবে। এটা যদি না পারো তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশি দিন টিকতে পারবে না। আমার খুব ভালো মনে আছে, একটা টেনিস বল আর র্যাকেট দিয়ে উনি আমাকে নেট সেশন করিয়েছিলেন। বাউচার একের পর এক শর্ট বল দিচ্ছিলেন, আর আমাকে তার মোকাবিলা করতে হচ্ছিল। ওই দিনগুলি আজও ভুলিনি। ওরা যদি আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিতেন, তাহলে আজ হয়তো এই জায়গায় আসতে পারতাম না।’
গ্যারি কার্স্টেন, যাঁর কোচিংয়ে ২০১১ সালে দ্বিতীয় বার বিশ্বকাপ জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন কোহলি। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের একেবারে প্রারম্ভিক পর্বে ফ্রন্ট ফুটের সমস্যায় পড়েছিলেন কোহলি। সেই সময় তিনি সান্নিধ্য পেয়েছিলেন গুরু গ্যারির। এই প্রসঙ্গে বিরাট বলেন, ‘তখন আমার বয়স মাত্র ১৯ বছর। গ্যারি কার্স্টেনের সঙ্গে একটা সেশনই বদলে দিয়েছিল আমার ক্রিকেট কেরিয়ার। ক্রিকেটার হিসেবে এগিয়ে চলার পথে এমন কয়েকজন মানুষের সাহায্য পেয়েছি, যা কখনও ভুলব না। তাদের মধ্যে অন্যতম স্যার গ্যারি কার্স্টেন। ভারতীয় দলে উনি ছিলেন আমার প্রথম কোচ। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পরেও ব্যাটিং নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। দেখছিলাম, ব্যাট করার সময় সামনের পা অনেকটা বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি মূলত এই সমস্যা নিয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। সব শুনে উনি বললেন, তোমার মাথাটা একেবারে সঠিক জায়গায় থাকছে। বলও প্যাডে লাগছে না। তাহলে কেন তুমি সামনের পা কোথায় যাচ্ছে তা নিয়ে এত ভাবছো? ওনার ইতিবাচক পরামর্শ আমার চিন্তা ভাবনা পুরোপুরি বদলে দিয়েছিল। ভবিষ্যতে গ্যারির উপদেশ মেনে ব্যাট করে সুফল পেয়েছি।’
ভারতের প্রাক্তন কোচ ডানকান ফ্লেচারের ক্রিকেট দর্শন ও কোচিং পদ্ধতিরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কোহলি। তিনি বলেছেন, ‘আমি অনেক কোচের অধীনে খেলেছি। তবে ডানকানের মতো ক্রিকেট বোধ খুব কম জনের মধ্যেই দেখেছি। ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম, যা পরবর্তীকালে আমাকে দারুণ ভাবে সাহায্য করেছে।