মাস খানেক আগেই ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সক্লোরোকুইনকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ‘গেম চেঞ্জার’ অর্থাৎ তুরুপের তাস আখ্যা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকায় এই ওষুধের অভাব মেটাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সে দেশে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন পাঠানোর হুমকি দিতেও ছাড়েননি। তবে এবার করোনা-আক্রান্তদের ওপর হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন প্রয়োগ নিয়ে সতর্কতা জারি করল খোদ আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। তাঁর ‘গেম চেঞ্জার’ নিয়ে এফডিএ-র সতর্কবার্তা শোনার পরও অবশ্য ট্রাম্প আমেরিকার সর্বোচ্চ খাদ্য ও ওষুধ নিয়ামক সংস্থাকে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন-এর বিষয়ে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছেন।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ সারাতে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম, এই মত কোনও প্রথাগত বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরং সেটি ছিল অনেকটাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নির্ভর। কোনও কোনও ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্ত রোগীর ওপর হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন প্রয়োগ করে কিছু উন্নতি দেখা গেছে এমন অভিজ্ঞতাভিত্তিক কিছু ফলাফলের কথা জানা গিয়েছিল। ফ্রান্সের মার্সেলি শহরে চিকিৎসক-গবেষকদের একটি দল ৮০ জন করোনা ভাইরাসে প্রাথমিক স্তরে আক্রান্ত রোগীর ওপর হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন (অ্যান্টিবায়োটিক) একসঙ্গে প্রয়োগ করেছিলেন। ৮ দিন পর ৯০ শতাংশ রোগীর শরীরে ভাইরাসের তেমন কোনও অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যদিও এই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে অধিকাংশ চিকিৎসকই এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট সন্দিহান। আর হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন-এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে ইওরোপিয়ান ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সতর্ক করার পরদিনই আমেরিকার এফডিএ মূলত ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবে চিহ্নিত হাইড্রোক্সক্লোরোকুইন, করোনা আক্রান্তদের ওপর প্রয়োগ বিষয়ে সাবধান করে দেয়। অত্যন্ত জরুরি পরিস্থিতিতেই একমাত্র অ্যাজিথ্রোমাইসিনের সঙ্গে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইনের ব্যবহার করার অনুমতি চিকিৎসকদের দিয়েছে এফডিএ। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাইড্রোক্সক্লোরোকুইনের সঙ্গে অন্য কোনও ওষুধ যেমন এক্ষেত্রে অ্যজিথ্রোমাইসিন প্রয়োগ করলে রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। ফলে যাদের কিডনি বা হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি খুবই বিপজ্জনক হয়ে যেতে পারে।