আগামী ১৮ মাসের জন্য ডিএ বৃদ্ধি আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে সমস্যার মুখোমুখি দেশের প্রায় এক কোটি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও অবসরপ্রাপ্তরা। করোনা মোকাবিলায় সরকারের এই সিদ্ধান্ত অমানবিক বলে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধী থেকে শুরু করে সরকারি কর্মচারীরা। এহেন পরিস্থিতিতে এবার ডিএ বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক। নিজের আবেদনে সেনা আধিকারিকের দাবি, সরকার মহার্ঘ ভাতা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুক।
শীর্ষ আদালতের মামলা দায়েরকারী প্রাক্তন ওই সেনা আধিকারিকের নাম মেজর ওঙ্কার সিং গুলেরিয়া। নিজের আবেদনে তিনি বলেন, অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া ঘরে থাকি আমি। অর্থ উপার্জনের আমার একমাত্র রাস্তা পেনশন। শুধু আমি নই এমন হাজারো সেনা কর্মী আছেন যারা পেনশনের ওপর নির্ভরশীল। যারা কেন্দ্রীয় সরকারের মহার্ঘ ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাঁর বক্তব্য, যেখানে গোটা বিশ্বে করোনা সংকট ভয়াবহরূপে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষেরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, সেখানে বৃদ্ধ পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা কেটে নেওয়াটা কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ তারা পুরোপুরি পেনশনের ওপরই নির্ভরশীল। পাশাপাশি জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর নিজের বক্তব্যই পালন করার কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘বরিষ্ঠ নাগরিকদের দেখভাল করুন এবং তাদের প্রাপ্য টাকা কাটবেন না। কারণ বয়স্ক নাগরিকদের জন্যই করোনা সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক।’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের মহার্ঘ ভাতা আটকে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস। এক টুইট বার্তায় সরকারের বিরোধিতা করে গতকালই রাহুল গান্ধী জানান, যে সমস্ত মানুষেরা কঠিন এই পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করে চলেছেন তাদের ডিএ বন্ধ করে দেওয়াটা চরম অমানবিক একটি সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে বুলেট ট্রেন বন্ধ করুক সরকার।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি সরকারি কর্মীদের ১৮ মাসের ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা সরকার নিয়েছিল, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এর এর প্রভাব পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় এক কোটি চাকুরীজীবী ও পেনশনভোগীদের উপর। সরকারের এই সিদ্ধান্ত খারিজের দাবিতেই এবার শীর্ষ আদালতে পৌঁছল মামলা।