ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বুধবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বাদুড়িয়া। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে গেলে আক্রান্ত হয়েছিলেন পুলিশ কর্মীরা। ইটের আঘাতে মাথা ফাটে বাদুড়িয়া থানার ওসি বাপ্পা মিত্রের। ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। ওইদিন রাতেই পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় মোট ২২জনকে। তাদের মধ্যেই ছিল রাম দাস নামে এক বিজেপি কর্মী। তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে মন্টু হাজি নামে এক বিজেপি নেতার নাম। তাকে গ্রেপ্তারের পরই প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ-হামলার গোটা ঘটনাটিই পূর্ব পরিকল্পিত। আগে থেকেই মজুত করা হয়েছিল ইট ও লাঠি। এরপরই নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয় অপারেশন।
এই ঘটনায় কাণ্ডে পুলিশের জালে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতা। ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ ও পুলিশকে আক্রমণের পিছনে ধৃত বিজেপি নেতার বড়সড় ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার মোবাইলটিও।
তারাগুনিয়া দাসপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল এলাকা একেবারে থমথমে। গ্রামবাসীদের একাংশ দুষছেন বিজেপি নেতা রাম দাসকে। স্থানীয় কাউন্সিলর অরিত্র ঘোষের অভিযোগ, , ‘কয়েকদিন আগে রাম জনাকয়েক লোক সঙ্গে এনে আমার কাছে নগদ টাকা দাবি করে। তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলাম কোনওভাবেই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তার পরেই পরিকল্পিতভাবে হাঙ্গামা।’
জানা গিয়েছ, ইতিমধ্যেই তদন্তের স্বার্থে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মন্টুর মোবাইল। কাদের সঙ্গে সে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত খোঁজ চলছে তাঁদেরও। লকডাউন চলাকালীন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ত্রাণের দাবিতে সরব হচ্ছেন। পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে বারবারই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। বাদুড়িয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এই সংকটকালে রাজনীতির হাতিয়ার কী তবে ত্রাণ?
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, ‘রাম দাস–সহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ১৫ জন মহিলা। লকডাউন ভেঙে সরকারি নির্দেশ অমান্য, পুলিশকে খুনের চেষ্টা, মারধরের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। বুধবারের ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।’