বিশ্ব বাজারে তেলের পাশাপাশি অপরিশোধিত চিনির দামেও পতন। যার জেরে সঙ্কটে পড়েছে ভারতের চিনিকলগুলি এবং আখচাষীরা। গত মরশুমেই বাজারে চিনির চাহিদা এত বেশি ছিল যে মনে করা হয়েছিল, চিনির উৎপাদন ঘাটতি হবে ৮–৯ মিলিয়ন টন। ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ কোঅপারেটিভ সুগার ফ্যাক্টরিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকাশ নৈকনাবারের আশঙ্কা, ভারতে চিনির ব্যবহার ১.৫–২ মিলিয়ন টন কমবে।
আখ থেকে রস নিষ্কাশন করে যেমন চিনি তৈরি হয়, তেমনই পাতন প্রক্রিয়ায় তা থেকে অ্যালকোহল তৈরি হয়। সেই অ্যালকোহল থেকেই তৈরি হয় ইথানল যা পেট্রলে মেশানো হয়। যখন বাজারে তেলের দাম বেশি থাকে, তখন ব্রাজিলের কারখানাগুলি আখ থেকে ৯৯ শতাংশের বেশি খাঁটি অ্যালকোহল দিয়ে ইথানল প্রস্তুত করে। এতে ব্যবসায় প্রচুর মুনাফা হয়। এখন বাজারে তেলের দাম একেবারেই কম। ফলে মুনাফা কম হবে এই ভেবে ব্রাজিলের কারখানাগুলোর ঝোঁক এখন চিনি তৈরির দিকে। আর এতেই বড় সমস্যায় পড়েছে ভারতের চিনি কলগুলি ও আখচাষীরা। ২০১৯-২০ সালে কোভিড–১৯ এর আগে পর্যন্ত ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলি ৫.৫ থেকে ৬ টন অপরিশোধিত চিনি রপ্তানি করেছে। এমনকী কারখানাগুলির সঙ্গে ৩.৮ মিলিয়ন টনের চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৩.০৫ মিলিয়ন টন পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববাজারে চিনির দামে পতন ও ব্রাজিলের উৎপাদন বৃদ্ধি গোটা হিসেব ওলটপালট করে দিতে পারে।
এই প্রসঙ্গে নৈকনাবারে জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ার রিফাইনারিগুলির লক্ষ্যমাত্রা এবছর, ৩.৩ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত চিনি আমদানি। যা ২০১৯ সালের চেয়ে ২.৬ মিলিয়ন টন বেশি। তাছাড়াও ইন্দোনেশিয়া অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি পাবে দেশের চিনিকলগুলি এবং আখচাষীরা।