করোনার থাবায় থরহরিকম্প গোটা ভারত। যার মোকাবলায় চলছে দেশজোড়া লকডাউন। কিন্তু তার মধ্যেও বন্দী ছিলেন ওনারা। তবে মানবতার খাতিরে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশের পর আসামের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে জামিন পাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই। তবে ‘মুক্তি’ মিলছে না সহজে। চলছে হয়রানি। জেল থেকে ছাড়া পেলেও অভিযোগ উঠছে, তীব্র বাঙালিবিদ্বেষ এবং ঘৃণাই বাধা। বিদেশি তকমা নিয়েই তাই তাঁদের কাটাতে হবে জেলমুক্ত জীবন। প্রতি সপ্তাহেই থানায় হাজিরা বাধ্যতামূলক।
১৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, দেশের করোনা পরিস্থিতিতে অসমে ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্পে দু’বছরেরও বেশি সময় আটক বন্দিদের জামিন দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের ডিভিশন বেঞ্চ একই সঙ্গে জামিন এক লাখ থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকার ২টি বন্ড ধার্য করে। সঙ্গে দু’জন করে ভারতীয় জামিনদারের কথাও বলা হয়। সোমবার থেকে আসামের ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে বন্দীদের ছাড়া শুরু হয়।
শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মঙ্গলবার ছাড়া পান এক শিশু–সহ চারজন। বুধবার আরও দু’জন। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ধৃতদের জামিনদার পেতে খুব সমস্যা হচ্ছে। শিলচরের মতোই আরও ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে চলছে বন্দিদের ছেড়ে দেওয়া। তেজপুর থেকে ৩৩ জন ছাড়া পেয়েছেন। মঙ্গলবার ছাড়া পান সুলেখা দাস (৬), সীমা বর্ধন (২৯), মিনারা বেগম (৩৯) এবং মিনারার মেয়ে শাহানারা (১১)। বুধবার মুক্তি পান সুনীল দাস (৬৫) ও কামরুল ইসলাম লস্কর (২৯)।
উল্লেখ্য, মাত্র ১৫ দিন বয়সে মায়ের সঙ্গে ক্যাম্পে প্রবেশ শাহানারার। প্রথমে গোয়ালপাড়া, তার পর কোকরাঝাড় হয়ে শেষে শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে তাঁরা মুক্তি পেলেন। জানা গিয়েছে, এনাদের সকলকেই এখন প্রমাণ করতে হবে নিজেদের ভারতীয়ত্ব। আর যতদিন প্রমাণ না হচ্ছে, ততদিন মিলবে না সরকারি সুবিধা। পুলিশের অনুমতি ছাড়া বাইরে কোথাও যাওয়া চলবে না। এটাই জামিনের শর্ত। অন্যদিকে, শিলচরের সমাজসেবী কমল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, লকডাউনের জন্যই দেরি হচ্ছে জামিনে।