গতবছর আগামী বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ চলাকালীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বৈরথের আগে এক প্রস্তুতি ম্যাচে হঠাৎই তাঁর জীবনে নেমে আসে গাঢ় অন্ধকার। হাঁটুতে মারাত্মক চোট পেয়ে কয়েক মাসের জন্যই ছিটকে যান ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের ডিফেন্সের স্তম্ভ সন্দেশ ঝিঙ্গান। এরপর ধীরে ধীরে হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পরে সুস্থ হয়ে উঠে যখন জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সন্দেশ, তখনই ফের ধাক্কা। এবার শুধু তাঁর জীবনে নয়, গোটা বিশ্বেই নামল অন্ধকার। পৃথিবীকে গ্রাস করল মারণ করোনা ভাইরাস। আর এই করোনা অতিমারির জেরে ধীরে ধীরে স্তব্ধ হল গোটা ক্রীড়ামহল। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না।
ভারতীয় দলের রক্ষণের অন্যতম স্তম্ভ অবশ্য হতাশা ভুলে নীরবে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতিতে মগ্ন। ক্রিকেটের শহর বলেই পরিচিত চণ্ডীগড়ে তাঁর বাড়ি। সেখান থেকেই সন্দেশ জানালেন, ‘অস্ত্রোপচারের পরে রিহ্যাব শুরু করার সময়ই আমি নিজের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিলাম। মার্চ মাসে কাতারের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচের আগেই দলে ফিরতে মরিয়া ছিলাম। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলাম। কিন্তু করোনা অতিমারির ধাক্কায় সব ভেস্তে গেল। জানি না কবে আবার মাঠে নামতে পারব।’
এদিকে লকডাউনের কারণে মাঠে নামা বন্ধ। কিন্তু নিজেকে ফিট রাখতে শারীরিক কসরৎ তো করতেই হবে। তাই নিজের বাড়িতেই দু’বেলা করে অনুশীলন করছেন সন্দেশ। বলছিলেন, ‘রোজ তিন থেকে চার ঘণ্টা অনুশীলন করছি। সকালে মূলত কার্ডিয়ো (ফুসফুসের শক্তি বাড়ানোর অনুশীলন) ট্রেনিং করছি। বিকেলে বাড়ির জিমেই পেশির শক্তি বাড়ানোর অনুশীলন করছি। শুধু মাঠে নেমে বল নিয়ে খেলাটাই হচ্ছে না। বাকি সবই হচ্ছে।’
সন্দেশের উত্থান ভাইচুং ভুটিয়ার ক্লাব ইউনাইটেড সিকিম থেকে। এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার মনে করেন ভাইচুংয়ের জন্যই এই জায়গায় পৌছতে পেরেছেন। বলছিলেন, ‘ইউনাইটেড সিকিমের ট্রায়ালে যখন নেমেছিলাম, তখন আমি পুরো সুস্থ ছিলাম না। চোট ছিল। তাই প্রথমবার নির্বাচিত হইনি। ভাইচুং ভাই শেষ পর্যন্ত রাজি হন, আমাকে আরও সুযোগ দেওয়ার জন্য। দীর্ঘ দিন ট্রায়াল চলার পরে আমাকে নির্বাচিত করা হয়। ভাইচুং ভাইয়ের জন্যই ফুটবলার হিসেবে আমি প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি।’