যেখানে করোনার জেরে গোটা বিশ্ব এক লহমায় থমকে গিয়েছে, সেখানে বিশ্ব ক্রিকেটের প্রধান নিয়ামক সংস্থা আইসিসিতে এই মারণ ভাইরাসের প্রভাব কতটা? জানা গেছে, এমনিতেই অনেক ক্রিকেট বোর্ডই কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে। আর নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-তেও বিপর্যয় নেমে আসতে পারে দীর্ঘ দিন এ ভাবে ক্রিকেট বন্ধ থাকলে।
এ সব নিয়ে আলোচনা করার প্রথম সুযোগ ক্রিকেট কর্তারা পাচ্ছেন আজ, বৃহস্পতিবার। সদস্য দেশের চিফ এগজিকিউটিভদের নিয়ে এই বৈঠক হবে। বারোটি পূর্ণ সদস্য দেশ ও তিনটি অ্যাসোসিয়েট দেশের প্রতিনিধিরা থাকবেন আজকের বৈঠকে। শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছে ১৩ মার্চ সিডনিতে। অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ডের ওয়ান ডে। সেই ম্যাচও হয়েছিল ফাঁকা স্টেডিয়ামে। ভারতে শেষ ম্যাচ ধর্মশালায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। কিন্তু সে ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। এর পরে লখনউতে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারেরা পৌঁছলেও করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় সেই সিরিজ বন্ধ হয়ে যায়।
এভাবে মাসের পর মাস খেলা বন্ধ থাকায় অনেক দেশই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিন্তার জায়গা আইপিএল। যদি শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দিতে হয়, টিভি সম্প্রচার স্বত্ব থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের আইপিএল বেতন, রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার অনুদান সবই ধাক্কা খাবে। অনুমান করা হচ্ছে, শুধু টিভি সম্প্রচার স্বত্ব বাবদই তিন হাজার কোটি টাকার উপরে লোকসান হতে পারে এই আইপিএল বাতিল হলে। স্পনসরশিপ বাবদ ক্ষতি হতে পারে আরও ৪০০-৫০০ কোটি টাকা। আইপিএল নিলামে বিশাল অর্থে বিক্রি হলেও ক্রিকেটারেরা কেউ সেই টাকা পাবেন না, যদি খেলাই না হয়।
যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নিশ্চিতভাবে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ করোনা নিয়ে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হতে পারে, সে ব্যাপারে কারও কোনও আন্দাজ নেই। যতক্ষণ না বিশ্বব্যাপী লকডাউন শিথিল হচ্ছে, ততক্ষণ আগামী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করাই অর্থহীন বলে কর্তাদের অনেকে মনে করছেন। কারও কারও কথায়, ‘কত দিন এই পরিস্থিতি চলবে, সেটাই তো এখনও পরিষ্কার নয়। তা হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করাও সম্ভব নয়।’