রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল যে, কলকাতা, হাওড়া সহ বাংলার সাতটি জেলায় পরিস্থিতি গুরুতর। সেখানে ঠিকমতো লকডাউনের শর্ত মানা হচ্ছে না। তাই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দুটি আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
চব্বিশ ঘন্টাও কাটল না। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, কোন যুক্তিতে আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল কেন্দ্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট জানাতে হবে। নইলে ওই প্রতিনিধি দলকে বাংলায় কাজ করতে দেব না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ করে টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কেন্দ্রকে আগে কারণ জানাতে হবে। নইলে রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে সাড়া দেবে না। মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, কেন্দ্র একতরফা ভাবে যে পদক্ষেপ করেছে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শর্তকেই লঙ্ঘন করেছে।
এই প্রসঙ্গে ২ টি টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম টুইটে মমতা লেখেন, ‘কোভিড ১৯-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সবরকম গঠনমূলক পরামর্শের আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার কিসের ভিত্তিতে রাজ্যের কিছু জেলায় আইএমসিটি (কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল) মোতায়েন করার প্রস্তাব বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে দিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।’ দ্বিতীয় টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু’জনের কাছেই আবেদন করব এটা কী কারণে করা হচ্ছে সেটা দেখান। অন্যথায় বলতে হবে, আমরা বিষয়টা নিয়ে এগোতে পারব না। কেননা এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে।’ কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে তিনি যে একেবারেই খুশি নয়, সেটাই কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, রবিবার দিল্লী থেকে নবান্নকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৩৫(১), ৩৫(২), ৩৫(২)(এ), ৩৫(২)(ই) এবং ৩৫(২)(আই) ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রের অধিকার প্রয়োগ করে আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাঁচজন করে একেকটি টিমকে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম দলটির নেতৃত্বে থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব চন্দ্র। তাঁর নেতৃত্বে পর্যবেক্ষণ করা হবে কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও উত্তর চব্বিশ পরগনার। এছাড়াও এ টিমে থাকবেন থাকবেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার যুগ্ম সচিব রমেশ চন্দ্র গন্ট, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর জিলে সিংহ ভিকাল, পাবলিক হেল্থ স্পেশালিস্ট অধ্যাপক আর পতি এবং উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের ডিরেক্টর সীতারাম মিনা।