কলকাতা ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে কেন্দ্রীয় আমলাদের দল পা রাখার পনেরো মিনিট আগে তা নবান্নকে জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “এমনকি আমার তো মনে হচ্ছে ওঁরা (আন্তঃমন্ত্রক দলের সদস্যরা) এখানে আসার পর আমাদের জানানো হয়েছে!”
কলকাতা, হাওড়া-সহ বাংলার সাতটি জেলার করোনা পরিস্থিতিকে ‘গুরুতর’ বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই ওই জেলাগুলির পরিস্থিতি দেখতে আন্তঃমন্ত্রক দল পাঠিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে এ কথা জানিয়েছিল দিল্লী। ওই চিঠিতে তারিখের স্থানে ১৯ এপ্রিল লেখা রয়েছে। কিন্ত মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার দাবি, নবান্নে যখন সেই চিঠি এসেছে তখনই তাঁরা জানতে পারেন, প্রতিনিধি দল কলকাতা আসার ১৫ মিনিট আগে।
এমনিতেই করোনা আবহে তথ্য নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য মৃদু সংঘাত চলছেই। একবার তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেই দিয়েছিলেন যে, কেন্দ্র কেন আমাদের সংখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করছে। আমরা তো তা করছি না! তারমধ্যে এই আন্তঃমন্ত্রক দলের বাংলায় আসা যেন সেই সংঘাতে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর গলায় যে চড়া সুর শোনা গিয়েছিল দুপুরে, বিকেলে প্রায় সেই সুরেই কেন্দ্রীয় দল নিয়ে তির্যক মন্তব্য করলেন মুখ্যসচিব।
এদিন রাজীব সিনহা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘গাইডলাইন না মেনে কেন্দ্রীয় দল এসেছে। আমাদের কিছু না জানিয়েই এলাকায় চলে যাচ্ছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না।’ তিনি এও বলেন, ‘কেন ওই ৭টি জেলা বেছে নেওয়া হল সেটাও আমরা বুঝতে পারছি না।’ রাজীব সিনহা উদাহরণ দিয়ে বলেন, জলপাইগুড়িতে শেষ সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৪ এপ্রিল। অর্থাৎ গত ১৫-১৬ দিনে ওই জেলায় নতুন করে সংক্রমণ হয়নি। তাও ওখানে গেছে আন্তঃমন্ত্রক দল।
তবে এখানেই থামেননি মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম আমার সঙ্গে আমার ঘরে এসে কথা বলুন। তারপর মনে হলে এলাকায় যান। কিন্ত ওঁরা শোনেননি।’ এদিন মুখ্যসচিবকে প্রশ্ন করা হয়, এটা কি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত হানা হয়েছে বলে মনে করছেন? জবাবে রাজীব সিনহা বলেন, ‘আমি এই প্রশ্ন শুনেই বিস্মিত হচ্ছি. এটা রাজ্য সরকার বনাম কেন্দ্রীয় সরকারের লড়াই নয়। আমরা সবাই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি।’