গত বছর থেকেই দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে তলানিতে যাচ্ছিল। মন্দার ঝোঁক ছিল আগে থেকেই। তার ওপর ২০২০-তে একেবারে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ। বহু রাজ্যেই সরকারি কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধায় কাটছাঁট ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। এবার সেই মিতব্যয়িতার আঁচ পৌঁছল সংসদেও। ভ্রমণ, খাওয়া এবং সম্মেলনের ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করে সংসদের উভয় কক্ষের কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হল প্রথম ত্রৈমাসিকে এইসব খাতে যে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে, তার মাত্র ২০ শতাংশ খরচ করা যাবে।
লোকসভা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে বেতন ও ‘অত্যন্ত জরুরি’ খরচ ছাড়া আগাম অনুমতি না নিয়ে এপ্রিল মাসে আর কোনও খরচ করা চলবে না। সংসদে কর্মরত ২০০০ কর্মীকেই এই টানাটানির মধ্যে থাকতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বেতন ছাড়া আর কোনও খরচ না করার জন্য সংসদীয় দফতরে অভ্যন্তরীন মেমো জারি করা হয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধ করতে গিয়ে চল্লিশ দিন ধরে চলা লকডাউনে দেশের অর্থনীতি যে কতটা বেহাল হয়ে পড়েছে এই ধরনের পদক্ষেপ তারই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
চলতি আর্থিক বছরের বাজেটে সংসদের খরচ হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৮১১ কোটি টাকা যা গত আর্থিক বছরের থেকে ৪৪ কোটি টাকা বেশি। রাজ্যসভার খরচের খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪৩৬ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, খরচ কমানোর জন্য যে যে বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে সেগুলি হল, কোনও কাজের জন্য এজেন্সি নিয়োগ, কোনও সম্মেলনে যোগদানের জন্য বিদেশ যাত্রা, সংসদ সদস্যের স্টাডি ট্যুর এবং যথেচ্ছ গাড়ি ব্যবহার।
এপ্রিল মাসের গোড়াতেই সমস্ত সাংসদের বেতন থেকে ৩০ শতাংশ বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে সিলমোহর দেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু। একই সঙ্গে প্রতি বছর সাংসদরা তাঁদের নির্বাচনী ক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য যে ৫ কোটি টাকা পান সেটিও দু’বছরের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবার সংসদের অন্যান্য খরচ কমিয়ে ফেলারও পদক্ষেপ নেওয়া হল।