করোনা সংক্রমণ রুখতে এবার র্যাপিড টেস্ট চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকায় র্যাপিড টেস্টের জন্য রাজ্যের ২৮টি জেলার ১৪টি হাসপাতালও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। মূলত হটস্পট এলাকায় যাঁদের মধ্যে সামান্যও উপসর্গ মিলবে, তাঁদেরই এই র্যাপিড টেষ্ট হবে। এদিন স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ১৭ তারিখে আইসিএমআর-র জারি করা নির্দেশ অনুযায়ীই এই টেস্ট করা হবে। তবে কোন কোন এলাকায় টেস্ট করা হবে, তা নির্ভর করবে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকার উপরেই। এ বিষয়ে গতকালই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে দফতর।
যে ১৪টি সেন্টারে এই র্যাপিড টেস্ট হবে, সেগুলি হল- কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ, মালদা মেডিক্যাল কলেজ, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, দেবেন মাহাতো পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, এসএসকেএম হাসপাতাল ও ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ।
শনিবারই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, করোনা মোকাবিলার জন্য সব দিক থেকেই তৈরি রয়েছে রাজ্য। সংক্রমন রুখতে ইতিমধ্যেই কলকাতার রাস্তায় নেমেছে কমব্যাট ফোর্স। মাইক্রো প্ল্যানিং করে চলছে কাজ। অতি স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকেও সিল করার কাজ শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। কোনো কোনো জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীও। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কড়া নজরদারিও চালানো হচ্ছে চিহ্নিত করা স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে।
কিন্তু কাদের কাদের হবে এই টেস্ট? বিজ্ঞপ্তি বলছে, পাঁচটি ক্ষেত্রে টেস্ট করা আবশ্যিক। ১) কেউ যদি গত ১৪ দিনের মধ্যে বাইরে কোথাও থেকে এসেছেন বলে জানা যায়, ২) করোনা ধরা পড়েছে এমন রোগীদের আশপাশে কেউ যদি এসেছেন বলে জানা যায়, ৩) যে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা রোগীর চিকিৎসা করেছেন, ৪) তীব্র শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডা লাগার সমস্যা হচ্ছে যাঁদের, এবং ৫) করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা কারও প্রথম টেস্ট নেগেটিভ এলেও, আরও একবার।
রাজীব সিনহা আরও জানান, বর্তমানে হাওড়ায় ৫৮০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ৬২ জন। পূর্ব মেদিনীপুরে ৩০০ জনের মধ্যে ১৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। টেস্টিং ল্যাবে দ্বিগুণ সময় ধরে কাজ চলছে। কিন্তু ব়্যাপিড টেস্টের কিট না থাকায় পর্যাপ্ত টেস্ট করা যাচ্ছে না। তাছাড়া সব দিক থেকেই তৈরি রাজ্য।
এর পরেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দেয়, কোথায় কোথায় এই ব়্যাপিড টেস্ট করা হবে। হটস্পট ও মাইক্রোপ্ল্যানিং এলাকাগুলিতে যতটা সম্ভব ততটাই জোর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে উল্লেখ করা হয়েছে, ব়্যাপিড টেস্টের নামে অযথা নষ্ট করা হবে না কিট।