লকডাউনে অনেক শ্রমিকই আসছেন না কাজে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষের কাজ। অনেক জায়গায় ফসল কাটতে দেরি হচ্ছে। কোথাও আবার দেরি হচ্ছে শীতের শস্য রোপণে। গম ও আরও কয়েকটি শস্যের বীজ রোপণ করার সময় পেরিয়ে যেতে বসেছে। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানে তুলো ও মুগ ডালের চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। শ্রমিকের সংকট তো আছেই, তার সঙ্গে বীজ এবং সারও পাওয়া যাচ্ছে না সময়মতো।
শ্রমিক পেতে সমস্যা হওয়ায় অনেক জমি মালিক ফসল কাটার যন্ত্রের ওপরে ভরসা করছেন। কিন্তু লকডাউনের ফলে ভিন রাজ্য থেকে যন্ত্রও আসতে পারেনি। বুন্দেলখণ্ডের চাষিরা বলছেন, ফসল তোলার চলতি মরসুমে শ্রমিক পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা কাজে আসছেন, তাঁরা বাড়তি মজুরি দাবি করছেন। আগে তাঁদের মজুরি ছিল দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা। এখন হয়েছে দৈনিক ৬০০-৭০০ টাকা।
অন্যদিকে এপ্রিল মাসের শেষেই মাঠ থেকে বোরোধান তোলা শুরু হবে। কিম্তু এই লকডাউনের বাজারে ধান কাটা ও ঝাড়ার জন্য শ্রমিক মিলবে কোথা থেকে, সেই ভেবেই কপালে চিন্তার ভাঁজ চাষিদের।
খরিফ বা আমনের তুলনায় বোরোচাষে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেশি তেমনি ঝুঁকিও বেশি। বোরোধান তোলার ভরা মরশুমে কালবৈশাখীর চোখ রাঙানি থাকে। থাকে ঝড় বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ। তাই চাষিরা এই সময়ে জমিতে বেশি শ্রমিক নিয়োগ করে অল্প সময়ে ধান তোলার কাজ সেরে নিতে চান। বছর বছর এটাই হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বাধ সেধেছে করোনা ভাইরাস।
এই সংকটের মুহূর্তে খানিকটা হলেও আশার কথা শুনিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানান, গোটা রাজ্যে ১৩৮০ টির বেশি সরকারি ভাড়া কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। চাষিরা এই ভাড়া কেন্দ্রগুলি থেকে ধান কাটার জন্য হারভেস্টার ভাড়া নিতে পারবেন। সরকারি ভাবে মোট তিন হাজারের মতও হারভেস্টার মেশিন ধান কাটার জন্য রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বড় হারভেস্টারগুলি ঘণ্টায় তিন বিঘে জমির ধান কাটতে ও ঝাড়তে পারে। ছোট হারভেস্টার গুলি এক ঘণ্টায় এক বিঘে জমির ধান কাটতে ও ঝাড়াই করতে পারে। এই হারভেস্টার মেশিন শ্রমিকের অভাব অনেকটাই দূর করতে পারবে। ধান কাটা ও ঝাড়াইয়ে খরচ অনেকখানি কমে যাবে। তাতে লাভ হবে কৃষকদেরই।’’