প্রায় গোটা পৃথিবীতেই চলছে লকডাউন। সবাই একসঙ্গে লড়ছেন এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে অসততা, আখের গোছাচ্ছেন অসাধুরা। লকডাউনের মধ্যে কারোর অ্যাম্বুলেন্স দরকার হলে তাকে লক্ষাধিক টাকা গুনতে হচ্ছে।
গত ৬ মার্চ ছেলেকে নিয়ে ভেলোরে সিএমসি হাসপাতালে যান খড়গপুরের নিমপুরার রাজেশ ভার্মা। ১৯ মার্চ ছেলে রাহুলের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। ছেলেকে হাসপাতালে ভরতি করার জন্যই নিয়ে গিয়েছিলেন রাজেশবাবু৷ কিন্তু, করোনার আবহে পাছে সংক্রমণ ছড়ায়, তাই ভরতি নিতে চায়নি ভেলোরের হাসপাতাল। তারপরই লকডাউন। ছেলেকে নিয়ে হোটেলবন্দি হয়ে পড়েন রাজেশবাবু। ফেরার পথ নেই, গণপরিবহণ অচল।
ফেরার পথ নেই, গণপরিবহণ অচল। একদিকে অসুস্থ ছেলের কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না, আবার টাকাপয়সাও শেষ হয়ে আসছে। মরিয়া হয়ে শেষে লাখটাকা ভাড়া দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সেই ফেরার সিদ্ধান্ত নেন রেলকর্মী রাজেশ। মঙ্গলবার ভোলোর থেকে রওনা হয়েছিলেন খড়গপুরের উদ্দেশে৷ ৪০ দিনের টানাপোড়েন শেষে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ফিরে এলেন বুধবার রাতে। তাঁর কথায়, “ভেলোরের হাসপাতাল ভরতি করাতে রাজি না হওয়ায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েছিলাম৷ শেষে ফিরতে পেরেছি। এতেই স্বস্তি।”
অসহ্য পেটের যন্ত্রণা, আর সারা শরীর জুড়ে অনবরত চুলকুনির জেরে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল কাঠমিস্ত্রি সুকুমার মজুমদারের। বাঁচার তাগিদেই সামান্য সঞ্চয়টুকু নিয়েই স্ত্রী ও জামাইকে সঙ্গী করে চিকিৎসার জন্য ছুটে এসেছিলেন ভেলোরে। লিভার ক্যানসার ধরা পড়ল বটে, কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ডাক্তারের জবাব শুনেই ফিরে যেতে চেয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু ততদিনে লকডাউন চালু, দীর্ঘ পথ পার হতে অ্যাম্বুল্যান্সই ভরসা। নগদ ৪০-৫০ হাজার টাকা গুনতে হল তাদের। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি বড়ই জটিল।