৩ মে অবধি গোটা দেশে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা হওয়ার পরই স্টেশন চত্বরের হতদরিদ্র মানুষদের খাবার দেওয়ার পরিমাণ কমাল রেল। মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশনে রেলের তরফে খাবার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি আগে রেলের তরফে দু’বেলা খাবার দেওয়া হলেও পরে তা একবেলা করা হয়। রেলের তরফে একবেলা খাবার কমিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে মঙ্গলবার একবেলা খাবার দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা বলেন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুঃস্থদের খাওয়াচ্ছে। ফলে তাঁদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
হাওড়া স্টেশন ও আশপাশে ঘুরে বেড়ানো অসংখ্য ভবঘুরে লকডাউনে চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছে। ভিক্ষা দেওয়ার মতো মানুষ না থাকায় তাঁদের খাবারে টান পড়েছে। পরিস্থিতি অনুধাবন করে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আইআরসিটিসিকে নির্দেশ দেন, এইসব ভবঘুরের জন্য রান্না করা খাবার দিতে। দিনে দু’বেলাই খাবার ব্যবস্থা করে রেল। হাওড়া-সহ বিভিন্ন স্টেশনে খাবার খাওয়ানো শুরু করে রেল। হাওড়া বেস কিচেনে তৈরি খাবার পৌঁছে দেওয়া হয় নানা স্টেশনে। প্রথমদিকে হাত ধুয়ে দূরত্ব বজায় রেখে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে খাবার ব্যবস্থা হয়। পরিবেশন-সহ নানা দায়িত্ব সামলান আরপিএফ কর্মীরা।
তবে লকডাউনের দিন বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই রেলের এই মানবিকতায় ভাটা পড়ে। রাতে খাবার দেওয়া বন্ধ করা হয়। মঙ্গলবার খাবার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে দেড়শো জনকে খাওয়ানো হয়। রাতের খাবার বন্ধ করা হয়েছে বেশি লোক না আসার ফলে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খাবার দেওয়ায় রাতে সেদিকে চলে যান এই মানুষগুলি। ফলে রাতে খাবার দেওয়া হয় না।
এদিকে ভবঘুরে মানুষদের সঙ্গে করুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে স্টেশন চত্বরে থাকা কুকুররা। তারাও ঠিকমতো খাবার পাচ্ছে না। পাশাপাশি হাওড়া স্টেশনে বসবাসকারী ইঁদুরকুলও লকডাউনে ধরাশায়ী। হাজার হাজার ইঁদুর না খেতে পেয়ে চরিত্র বদলাচ্ছে। প্রচণ্ড হারে মাটি খুঁড়ছে। ‘দ্যা রাট সিটি আন্ডার দ্যা স্টেশন’ বলে পরিচিত হাওড়া স্টেশনের তলায় রয়েছে এদের রাজত্ব। মাটি খোঁড়ার ফলে স্টেশনে ধস নামার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়নি রেল।