করোনা আতঙ্কে লকডাউনের শুরু হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, বেলুড় মঠ-দক্ষিনেশ্বরের মত তীর্থক্ষেত্রগুলি। যার জেরে উপাসনাস্থল, দেব-দর্শন বা প্রার্থনায় যেতে পারছেন না বহু মানুষ। করোনা সতর্কতায় চিকিৎসক থেকে প্রশাসনের কর্তারাও বারবার বলছেন, সামাজিক হোক বা ধর্মীয় উৎসব, আপাতত বাড়িতেই পালন করতে। কারণ, জমায়েতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। শনিবার সেই বার্তাই আরও জোরালো ভাবে শোনা গেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।
এদিন একেবারে নিজের উদাহরণ দিয়ে রাজ্যের সাধারণ নাগরিকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, তিনি নিজেও এই নিয়মের ব্যতিক্রম নন। পয়লা বৈশাখে তিনি কালীঘাটে মাতৃ বিগ্রহ দর্শনে যাবেন না এ বার। এ জন্য তাঁর খারাপ লাগছে ঠিকই, কিন্তু অন্যদের নিষেধ করে তিনি একা মন্দিরে যেতে চান না বলে শনিবার জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে গভীর রাতে কালীঘাটে মাতৃ বিগ্রহ দর্শন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহুকালের অভ্যাস। করোনা এবং লকডাউনের জেরে এ বার বহু মানুষের নানা রুটিন বদলে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘বৃহত্তর স্বার্থে উৎসব-পার্বণে সবাই নিজের এবং সহ-নাগরিকদের কথা চিন্তা করে বাড়ির মধ্যেই সুরক্ষিত থাকুন।’ শনিবার তিনি বলেন, ‘জীবনে এই প্রথম আমি পয়লা বৈশাখে কালী-দর্শনে যাচ্ছি না। সবাইকে বারণ করে আমিই বা মায়ের মন্দিরে যাব কী করে?’
শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিও বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আগামী দু’টি সপ্তাহ খুব ক্রুশিয়াল বলে মতপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, সামনের দু’টো সপ্তাহ নানা উৎসব, পার্বণ থাকলেও এখন সাধারণ মানুষ যেন কোথাও কোনও রকম জমায়েত না-করেন। তা বোঝাতে এবং প্রচার করতে হবে।’ পরে ওই হাই-প্রোফাইল বৈঠকের নির্যাস সাংবাদিকদের জানানোর সময় মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেন, ‘এখন সবাই প্লিজ সব উৎসব নিজের বাড়িতেই বসে পালন করুন। এটা একটা দুঃস্বপ্নের আগুন লেগেছে। সবাই মিলে জল ঢেলে সেই আগুনটা নেভাতে হবে।’