প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত কয়েকদিন ধরেই মৃত্যুমিছিল চলছে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে। এক-একটা দিন যাচ্ছে, আর জমছে লাশের পাহাড়। অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগে যারা প্রাণ হারাচ্ছেন, সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে তাদের শেষকৃত্যও করছেন না পরিজনরা। আবার অনেকের শেষকৃত্য করার মতো অর্থটুকু নেই। ফলে করোনায় মৃতদের গণকবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ ইয়র্কের সিটি করপোরেশন। নিউ ইয়র্কের হার্ট আইল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত মৃতদের গণকবর দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব বর্তেছে কারা দফতরের কাঁধে।
নিউ ইয়র্কে করোনা কতটা তাণ্ডব চালিয়েছে তার ভয়াল ছবিটা কিছুটা অনুমান করা যাচ্ছে কারা দফতরের মুখপাত্র জ্যাসন কারস্টেনের কথায়। তাঁর কথায়, ‘আগে সপ্তাহে ২৫ টির মতো মৃতদেহ কবরস্থ করা হত। আর এখন প্রতিদিন অন্তত ২ ডজন মৃতদেহ কবর দিতে হচ্ছে। ফলে গণকবর ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।’ ভবিষ্যতে যদি মৃতদের কোনও স্বজন এসে মৃতদেহ দাবি করেন, সেই কথা ভেবে কাঠের কফিনের উপরে মৃতের নাম লিখে রাখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মারণ ভাইরাসে শুধু নিউ ইয়র্কে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৮৪৪ জন। আগামী দিনে আরও বহু মানুষ করোনার বলি হবেন, এমন আশঙ্কায় গণকবরের জন্য বেশ কয়েকটি বড় গর্ত করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারস্টেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয়ধারী কিংবা পরিজনরা শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে আর্থিকভাবে অসমর্থ-এমন ব্যাক্তিদের উনিশ শতক থেকেই হাই আর্টল্যান্ডে কবর দেওয়া হয়। একমাত্র নৌকাতে চড়েই প্রবেশ করতে হয় দ্বীপটিতে। আর ওই দ্বীপে থাকা কারা দফতরের সংশোধনাগারের বন্দিরাই মৃতদেহকে কবরস্থ করার কাজটি করে থাকে। কিন্তু এবার আর অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগে মৃতদের কবর দেওযার কাজে কারাবন্দিদের ব্যাবহার করার মতো ঝুঁকি নেননি কারা দফতরের আধিকারিকরা। বরং এক ঠিকাদার সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই ঠিকাদার সংস্থা যন্ত্রের সাহায্যে বড় গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে মাটির নিচে নামিয়ে দিচ্ছে লাশবন্দি কফিন।